পুনরায়: ফের শুরু হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ। মঙ্গলবার, বি বা দী বাগে। নিজস্ব চিত্র
সংক্রমণের আশঙ্কায় করোনামুক্ত পরিবেশ তৈরি করে নির্মাণের কাজ চালাতে চায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। এ জন্য নির্মাণস্থল সংক্রমণমুক্ত রাখতে একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ঠিকাদার সংস্থাগুলি। সংক্রমণমুক্ত অঞ্চল থেকে শ্রমিকদের এনে কোয়রান্টিনে রেখে তাঁদের নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে শ্রমিকেরা নির্ভয়ে কাজ করতে পারেন। নির্মাণস্থল সংক্রমণমুক্ত রাখতে পারলে আগের গতির প্রায় কাছাকাছি গতিতেই কাজ চালানো যাবে বলে মনে করছেন নির্মাণ সংস্থার আধিকারিকেরা।
লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে সম্প্রতি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ আবার শুরু হয়েছে। এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে সুড়ঙ্গ নির্মাণ ছাড়াও হাওড়া ময়দান, হাওড়া স্টেশন, বি বা দী বাগ এবং এসপ্লানেডে ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। লকডাউনের পরে ওই সব নির্মাণস্থল থেকে অধিকাংশ শ্রমিক বাড়ি ফিরে যান। তবে, সেই সময়ে যে সংখ্যায় শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন, তা এখন কিছুটা কমে এসেছে। করোনার পরিস্থিতিতে নতুন করে কাজ শুরু করতে গিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং নির্মাণ সংস্থাগুলিকে একাধিক বিষয়ে সতর্কতা নিতে হয়েছে। করোনা রুখতে কলকাতা এবং পার্শ্ববতী জেলার বদলে সংক্রমণ নেই বা সংক্রমণ খুব সামান্য, এমন অঞ্চল থেকে শ্রমিকদের আনার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য রাখতে হচ্ছে। সেই নথি দেখে, এলাকাভিত্তিক সংক্রমণের পরিস্থিতি বিচার করে শ্রমিকদের ফেরানো হচ্ছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, কর্মস্থলে ফেরার পরে উপসর্গ পরীক্ষা করে শ্রমিকদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে। তার পরে আর টি পি সি আর পরীক্ষা করে সংক্রমণ না থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। এ ভাবে বাছাই করা শ্রমিকদের সম্পূর্ণ আলাদা রাখা হচ্ছে। তাঁদের থাকা-খাওয়ার পৃথক ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে কোনও ভাবেই তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ না ছড়ায়। তাঁদের খাবারের জন্য আনাজ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। যাঁরা বাইরের জিনিস কেনাকাটা করার কাজ করছেন, তাঁদের কর্মী এবং আধিকারিকদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাইরের কেউ দেখা করতে এলে তাঁর সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য রাখছেন কর্তৃপক্ষ। যাবতীয় সতর্কতা মানতে হচ্ছে কর্তব্যরত আধিকারিকদেরও। দূরত্ব বিধি মেনে অন্যান্য যাবতীয় সতর্কতা নিয়ে তবেই দেখা করার অনুমতি মিলছে।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে অমিল অ্যাম্বুল্যান্স, ভোগান্তি চরমে
কাজের জায়গায় নিয়মিত হাত ধোয়া, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্যানিটাইজ় করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নির্মাণস্থল সম্পূর্ণ সংক্রমণমুক্ত রাখতে পারার একাধিক সুবিধা রয়েছে বলে মনে করছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ওই পরিস্থিতিতে নানা যন্ত্রপাতি নিয়ে নির্মাণের জটিল কাজ চালানোর ক্ষেত্রে কর্মী এবং আধিকারিকেরা অনেকটা চাপমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন বলে মত মেট্রোকর্তাদের। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে পারলে কাজের স্বাভাবিক গতি অর্জন করা ছাড়াও আচমকা সংক্রমণের জেরে কাজ বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি এড়ানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।