বিধাননগর পুরসভা। -ফাইল চিত্র
ছোঁয়াচ এড়াতে এ বার অনলাইনেই ফাইল চালাচালির ব্যবস্থা করতে চলেছে বিধাননগর পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দফতরের সমস্ত কাজকর্ম অনলাইনে নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তার জন্য পুরসভায় ই-অফিস পরিকাঠামো তৈরির কাজও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পদ্ধতিতে সব ধরনের কর্মচারীকে অভ্যস্ত করে তুলতে তাঁদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর।
কলকাতার মতো বিধাননগর পুর এলাকাতেও ত্রাসের সৃষ্টি করেছে করোনা পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই দেড় হাজার মানুষ সেখানে করোনায় আক্রান্ত। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে খুব দ্রুত। আতঙ্কিত পুরকর্মী এবং আধিকারিকেরাও। বিধাননগর পুরসভার এক বরিষ্ঠ ইঞ্জিনিয়ারও সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। এই অবস্থায় দ্রুত ই-অফিস ব্যবস্থা চালু করার পক্ষপাতী পুর কর্তৃপক্ষও।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ফাইলের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর যথেষ্ট আশঙ্কা থেকে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘একটি ফাইল যিনি নিয়ে আসছেন, তিনি নিজেও জানেন না, তাঁর হাতে করোনাভাইরাস রয়েছে কি না। প্রতিটি ফাইলই একাধিক হাত ঘোরে। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর যথেষ্ট আশঙ্কা থাকে।’’ এই অবস্থায় ঝুঁকি যথাসম্ভব কমাতেই ই-অফিসের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে ওই অফিসার জানান। তাঁর বক্তব্য, বর্তমানে অন্য অনেক জায়গার মতো পুরসভার কর্মী-আধিকারিকেরাও নির্ধারিত দিন মেনে বাড়িতে বসে কাজ করছেন। তবে জরুরি পরিষেবা বিভাগের আধিকারিকদের অফিসে এসে ফাইলে সই করতে হচ্ছে। চাইলেও ঝুঁকি এড়ানো যাচ্ছে না।
পুরসভা সূত্রের খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে, সল্টলেকে বিধাননগর পুরসভার সদর দফতরে ই-অফিস ব্যবস্থা চালু করা হবে। তার পরে পরিস্থিতির উপরে নজর রেখে প্রয়োজনে বরো অফিসগুলিতেও ই-অফিস চালু করা হতে পারে। তবে বরো অফিসের আধিকারিকদের সঙ্গে পুর ভবনের আধিকারিকদের অনলাইনে যোগাযোগ থাকবেই।
কী ভাবে কাজ হবে?
এক আধিকারিক জানান, নতুন ফাইল অনলাইনে তৈরি করা হবে। পুরনো ফাইলের বিষয়বস্তু স্ক্যান করে আপলোড করে দেওয়া হবে। প্রত্যেক আধিকারিকের অনলাইনে নিজস্ব আইডি থাকবে। তাঁরা তাতে ডিজিটাল সই করবেন। এক দফতরের আধিকারিক ফাইলে ডিজিটাল সই করে তা অন্য দফতরের আধিকারিকের কাছে তাঁর নির্দিষ্ট আইডি-তে পাঠিয়ে দেবেন। আধিকারিকেরা জানান, এই অনলাইন ব্যবস্থায় কাজ করার জন্য বিভিন্ন দফতরের পদস্থ অফিসারদেরও প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রশিক্ষণ চলবে দু’মাস ধরে। সে জন্য ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফে তাঁদের ফর্ম দেওয়া হয়েছে।
মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কাগজবিহীন ভাবে অফিস চালানোর যে নির্দেশিকা রাজ্য সরকার দিয়েছে, আমরাও সেই পথেই হাঁটার পরিকল্পনা করেছি। সব দিক গুছিয়ে নিয়েই ই-অফিস চালু করা হবে। কাজ এগোচ্ছে।’’