Durga Puja 2022

গঙ্গার ঘাটে বাড়তি নিরাপত্তা, নির্বিঘ্নেই চলল বিসর্জন-পর্ব

বুধবার বাজেকদমতলা ঘাটে বিসর্জনের শুরুতেই পুরসভার পে-লোডারের ধাক্কায় এক বালক আহত হয়েছিল। ওই ঘটনায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ দিন ওই ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, অঘটন এড়াতে ব্যারিকেড করে চার দিক ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৪২
Share:

বিসর্জন। ছবি: পিটিআই

কলকাতা পুরসভা এলাকায় গঙ্গার ১৭টি ঘাটে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বিসর্জন। চলবে শনিবার পর্যন্ত। মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এ দিন ভোর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন ঘাটে ২৫৫০টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। কলকাতায় সাড়ে তিন হাজারেরও কিছু বেশি প্রতিমা বিসর্জন হয়।’’

Advertisement

বুধবার বাজেকদমতলা ঘাটে বিসর্জনের শুরুতেই পুরসভার পে-লোডারের ধাক্কায় এক বালক আহত হয়েছিল। ওই ঘটনায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ দিন ওই ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, অঘটন এড়াতে ব্যারিকেড করে চার দিক ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ভিতরে ঢুকতে পারছেন শুধুমাত্র বিসর্জনে আসা লোকজন। নদী থেকে প্রতিমা তুলে নিতে ছিল ক্রেন, বার্জ, পে-লোডার ও লরি। ঘাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে টহল দিয়েছে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ। পুর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, রবিবারের মধ্যেই বিভিন্ন ঘাট থেকে কাঠামো-সহ বিসর্জনের আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হবে।

গঙ্গাদূষণ ঠেকাতে প্রতিমার কাঠামো দ্রুত তোলার জন্য আগামী বছর থেকে ভাসান কুলিদের কাজে লাগাতে চায় পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, সামনের বছর থেকে বেশি করে ভাসান কুলি নেওয়া হবে। তাঁরাই কাঠামো দ্রুত জল থেকে তুলবেন। বিষয়টিকে সমর্থন করে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘বিসর্জনের সময়ে পুজো কমিটির কুলিরা হাত লাগান। আমি মেয়রকে বলেছি, ওঁদের কাজে লাগিয়ে গঙ্গা থেকে দ্রুত কাঠামো তুলে ফেলা দরকার। এর ফলে প্রতিমার রংটা গঙ্গার জলে না মিশলে গঙ্গাদূষণ রোধ করা অনেকটাই সম্ভব হবে।’’

Advertisement

এ দিকে, গত দু’দিনে হাওড়ার ঘাটগুলিতেও সুষ্ঠু ভাবে বিসর্জন হয়েছে। মোতায়েন ছিল পুলিশের বিশাল বাহিনী। গঙ্গাদূষণ এড়াতেও সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দশমীর দিনই প্রায় ৩০০ প্রতিমা বিসর্জন হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আরও ৪০০ প্রতিমার বিসর্জন হয়। হাওড়ায় এই প্রথম হচ্ছে বিসর্জনের কার্নিভ্যাল। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। তেলকল ঘাটের কাছে মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। রেল মিউজ়িয়াম থেকে রামকৃষ্ণপুর ঘাট পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেড বসেছে। আজ, শুক্রবার ১৭টি পুজো কমিটি কার্নিভ্যালে যোগ দেবে বলে খবর।

হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দশমীর দিন যে কাঠামোগুলি তোলা হয়েছিল, সেগুলি এ দিন ভোর থেকেই বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ফেলা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, হাওড়ার ঘাটগুলিতে পুরসভার অফিসারেরা উপস্থিত থাকছেন। ফুল, বেলপাতা-সহ অন্যান্য জিনিস পুরসভার সাফাই দফতরের কর্মীরা সরিয়ে নিচ্ছেন, যাতে সেগুলি গঙ্গায় না পড়ে।

পাশাপাশি, দমদমের তিন পুর এলাকাতেও দশমীর দিন অধিকাংশ পুজোর বিসর্জন নির্বিঘ্নে হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিসর্জন-বিপর্যয় মাথায় রেখে সেখানে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে খবর। বিসর্জন উপলক্ষেদমদমে নির্দিষ্ট কয়েকটি জলাশয়কে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ঘাটে রাখা হয়েছে জেসিবি, পে-লোডার। থাকছেন অতিরিক্ত পুরকর্মীও। ব্যারাকপুর কমিশনারেটও পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা করেছে বলে জানা গিয়েছে।

দমদমের যে সমস্ত জলাশয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন হচ্ছে, সেগুলি স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবহার করেন। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, জলের দূষণ ঠেকাতে নিরঞ্জন-পর্ব মিটে গেলেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করা প্রয়োজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement