বিপাকে মহম্মদ আলি পার্কের পুজো কমিটি। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার যে ক’টি দুর্গাপুজোয় বছরের পর বছর ধরে ভিড় হয়, তার মধ্যে অন্যতম মহম্মদ আলি পার্ক। মধ্য কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী পুজো ঘিরে এ বার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। স্থান সমস্যার জন্য চলতি বছর এই জমজমাট পুজো ঘিরে সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
পুজোর মণ্ডপসজ্জার কাজ স্থগিত রাখতে কলকাতা পুরসভার তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এত বছর ধরে মহম্মদ আলি পার্কে যেখানে পুজো হত, তার নীচেই রয়েছে ভূ-গর্ভস্থ জলাধার। ২০১৯ সালে এই জলাধার সংস্কারের জন্য পুজো প্রাঙ্গণের পাশে দমকল কেন্দ্রে পুজো হয়েছিল। ২০২০ সালেও সেখানে পুজো হয়। গত বছর করোনা আবহে মূল জায়গা থেকে খানিকটা সরে পুজো করা হয়েছিল। এ বছর আবার মূল জায়গাতেই মণ্ডপ বাঁধা হয়েছে। তার পরই পুজোর কাজ বন্ধ করতে শনিবার পুরসভা নোটিস দেওয়ায় রীতিমতো ‘মাথায় হাত’ পুজো কমিটির।
কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহের ডিজির তরফে দেওয়া নোটিসে বলা হয়েছে যে, অনুমতি ছাড়াই ওই জলাধারের উপরে মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। গত ১১ অগস্ট পুজোস্থলে যান সেন্ট্রাল ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। জলাধারের উপরে পুজো মণ্ডপের কাজ বন্ধের অনুরোধ জানান তিনি। নোটিসে জানানো হয়েছে যে, মহম্মদ আলি পার্কে যে জলাধারটি রয়েছে, সেটি অনেক পুরনো। তার উপর মণ্ডপ তৈরি হলে, অতিরিক্ত চাপ বহন করতে পারবে না। ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে, তা অবিলম্বে সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এর মধ্যে মহম্মদ আলি পার্কের পুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পুরসভার এ হেন নির্দেশিকায় ঘুম উড়েছে পুজো কমিটির। এক পুজো উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘দেড় মাস আগে খুঁটিপুজো হয়েছে। সে সময় স্থানীয় কাউন্সিলর ছিলেন। পুরসভাকে জানিয়েই মণ্ডপের কাজ শুরু করেছিলাম। এখন জলাধারের জন্য পুজোর কাজ স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। বিপদে পড়ে গেলাম আমরা।’’
তবে রবিবার সন্ধ্যায় মহম্মদ আলি পার্ক পুজো কমিটির মিটিং শেষ হয়। তার পরে কমিটির এক সদস্য প্রভাত তিওয়ারি জানান, কলকাতা পুরসভার সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছিলেন। সোমবার দুপুর ১২টায় জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছেন। তাঁরা ঠিক করেছেন পুজো কমিটির ছ’জন সদস্য যাবেন বৈঠকে। অন্য দিকে, সোমবার বিকেলেই পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক রয়েছে। সেখানেও এই বিষয়ে আলোচনা হবে। একটা সমাধান সূত্র বেরোবেই, এমনটাই আশা করছেন পুজো উদ্যোক্তারা।