প্রস্তুত: কাজ শুরুর দু’বছর সাত মাস পরে আজ, বৃহস্পতিবার খুলে যাবে টালা সেতু। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
এক দিকে পুজোর কেনাকাটার জন্য হাতিবাগানমুখী জনস্রোত, অন্য দিকে তারই মধ্যে টালা সেতুর উদ্বোধন হওয়ার কথা। এই দুইয়ের কারণে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে উত্তর কলকাতার ওই অংশে তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছেন পুলিশকর্মীরাই। ইতিমধ্যেই লালবাজারের তরফে ওই এলাকার ট্র্যাফিক গার্ডকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে সেতুর উদ্বোধনের কারণে যান চলাচলের দিক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বুধবার রাত পর্যন্ত কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে নেওয়া হয়নি বলেই খবর। রাজ্য সরকার এবং সেতুর নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলেই ট্র্যাফিক পুলিশ নিশ্চিত, উদ্বোধন হলেও আজ থেকে টালা সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে না।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরু হয়। কলকাতার সঙ্গে উত্তর শহরতলি এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশের অন্যতম যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এই সেতু। ফলে টালা সেতু বন্ধ হওয়ায় যান নিয়ন্ত্রণে কালঘাম ছোটে পুলিশের। পাশের লকগেট উড়ালপুল দিয়ে যান চলাচলের অভিমুখ একাধিক বার বদলে, চিৎপুর সেতু এবং আর জি কর সেতুকে আরও বেশি ব্যবহার করে, রেললাইনের উপরে লেভেল ক্রসিং তৈরি করে যান নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। তবুও প্রায় প্রতিদিনই ব্যাপক যানজট দেখা যায় বলে অভিযোগ। পুজোর মুখে কেনাকাটার ভিড়ে যা আরও বেড়েছে বলেই দাবি।
মুখ্যমন্ত্রী টালা সেতুর উদ্বোধন করার পরে সেখান দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে বিকল্প রাস্তাগুলি আর ব্যবহার করা হবে কি না, বাহলেও কী ভাবে হবে, এই সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিিশ সূত্রের খবর, টালা সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেলেও দু’দিকের ফ্ল্যাঙ্ক এখনই ব্যবহার করতে পারার নিশ্চয়তা মেলেনি। এ-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুজোর মধ্যে টালা সেতু ব্যবহার করা যেতে পারে শুধুমাত্র ছোট গাড়ি চলাচলের জন্য। মালবাহী গাড়ি এবং বাস আগের মতোই আর জি কর সেতু বা লকগেট উড়ালপুল দিয়ে চলাচল করানো হতে পারে। পুজোর পরে সেতুর একটি করে ফ্ল্যাঙ্ক বন্ধ রেখে বাকি থাকা কাজ শেষ করা হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। তাই পুলিশের সিদ্ধান্ত, এখনই বিকল্প রাস্তাগুলির ব্যবহার বন্ধ করা হবে না।
একই রকম ব্যবস্থা থাকবে উদ্বোধনের সময়েও। শুধুমাত্র লকগেট উড়ালপুলের দিক থেকে খালপাড় ধরে টালা সেতুকে বাঁ হাতে রেখে আর জি করের দিকে যাওয়া যাবে না। তেমনই আর জি কর থেকে এসে গ্যালিফ স্ট্রিট দিয়েও যাওয়ার সুযোগ থাকবে না বৃহস্পতিবার। তবে শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘হাতিবাগানে ভিড় বাড়লে অথবা শ্যামবাজার পাঁচ মাথার কাছে যানজট তৈরির আঁচ পেলে, গাড়ি অন্য দিক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে শ্যামবাজারের দিক থেকে হাতিবাগানের দিকে ঢোকার রাস্তাও বন্ধ করা হতে পারে।’’
পুলিশকর্মীরাও মানছেন, শ্যামবাজারের যান চলাচলের জট ছাড়ানোর পাশাপাশি টালা সেতুর উদ্বোধনের আগে এবং পরে তাঁদের মূল চ্যালেঞ্জ, ভিআইপি-দের গাড়ি বার করা। এ ক্ষেত্রে অবশ্য পরিস্থিতি বুঝে এগোনোর পক্ষে হাঁটতে চাইছেন পুলিশকর্মীরা।