—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জাতীয় শিক্ষা-নীতির অনুসারী ‘ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ মেনে কোর্স এবং ভর্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিজেদের অধীনস্থ কলেজগুলিকে অবশেষে নির্দেশ দিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষা দফতর আগেই জানিয়েছিল, ১ জুলাই থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ফলে, হাতে মাত্র এক সপ্তাহ সময়। এর মধ্যে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে নতুন ধাঁচের এই কোর্সের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে অধ্যক্ষ মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেড়শোরও বেশি কলেজ রয়েছে। অধ্যক্ষ মহলের একাংশের বক্তব্য, ‘ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ মেনে চার বছরের অনার্স কোর্স এ বার থেকে চালু হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ পাওয়ার পরে কলেজগুলিরও এই সংক্রান্ত নিজস্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। প্রতি বার পোর্টালের মাধ্যমে যে ভর্তি প্রক্রিয়া চলে, এ বার তার পরিবর্তন হবে। কারণ, বিষয়ের কম্বিনেশন, কত পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হবে, কত আসন অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে-সহ বিভিন্ন বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর পরে ঠিক ভাবে পোর্টাল তৈরি এবং তা চালু করার জন্য বেশ কিছু দিন সময় প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সংস্থার। তার পরে মহড়া চালানো দরকার।
মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মন্টুরাম সামন্ত শনিবার বলেন, ‘‘এই ক’দিনের মধ্যে ঠিকঠাক ভাবে পোর্টাল চালু করা অসুবিধাজনক।’’ হাওড়ার পাঁচলা কলেজের অধ্যক্ষা অর্পিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে আবার ইদের ছুটি রয়েছে। এত অল্প সময়ে সফল ভাবে পোর্টাল চালু করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ। অন্তত দু’সপ্তাহ সময় পেলে ভাল হত।’’
অধ্যক্ষদের অনেকের বক্তব্য, পাঠক্রম তিন থেকে চার বছরে পরিবর্তিত হওয়ার ফলে পোর্টালে বদল আনাটা সময়সাপেক্ষ। এই কারণ দেখিয়ে এ বারও রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় ভাবে অভিন্ন পোর্টালে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করতে পারেনি। কলেজগুলির হাতেই পড়ুয়া ভর্তির দায়িত্ব দিয়েছে। তা হলে কলেজগুলি কী ভাবে মাত্র এক সপ্তাহে তা পারবে? ‘নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদ’-এর সভাপতি এবং আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি অবশ্য নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তির পোর্টাল চালুর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
‘ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ মেনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্নাতকে এ বার থেকে তিন বছরের জেনারেল ও চার বছরের অনার্স কোর্সে ভর্তি নেওয়া হবে। অনার্সে এক, দুই, তিন এবং জেনারেলে এক ও দু’বছরের মাথায় কোর্স ছেড়ে পড়ুয়াদের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ, অর্থাৎ ‘মাল্টিপল এগজ়িট’ ব্যবস্থা থাকবে।
এক, দুই বা তিন বছর পরে যাঁরা বেরোতে চাইবেন, তাঁদের এক সিমেস্টার ইন্টার্নশিপ করতে হবে। এক বছর পড়ে বেরোলে পাবেন সার্টিফিকেট, দু’বছরে ডিপ্লোমা। তিন ও চার বছর পড়লে ডিগ্রি। চার বছরের অনার্সে ষষ্ঠ সিমেস্টারের পরে ৭৫% নম্বর থাকলে শেষ বছর গবেষণার সুযোগ মিলবে। সেই ডিগ্রির নাম হবে ‘অনার্স উইথ রিসার্চ’। দু’টি কোর্স শেষ করতে সর্বোচ্চ সময়সীমা সাত বছরে।