এসএসকেএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
খেলার সময়ে কোনও ভাবে মুখে ঢুকে গিয়েছিল ছোট একটি চুম্বক। দিন সাতেক ধরে ফুসফুসের মধ্যে আটকে ছিল বুলেটের মতো দেখতে বস্তুটি। পর পর দু’বার চেষ্টা করেও বিফল হওয়ার পরে, শেষমেশ সেই বস্তুটি বার করে বছর এগারোর বালককে সম্প্রতি বিপন্মুক্ত করল এসএসকেএম।
কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা মোস্তাকিম বিশ্বাসের বেশ কয়েক দিন ধরে কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। প্রথমে কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কিছু না হওয়ায়, তাকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান পরিজনেরা। দিনকয়েক আগে বালককে পিজির নাক-কান-গলা বিভাগে আনা হয়। চিকিৎসক অঙ্কিত চৌধুরী জানান, মোস্তাকিমের বুকের এক্স-রে করে দেখা যায়, ডান দিকের ফুসফুসে একটা কিছু আটকে আছে। তখন ব্রঙ্কোস্কোপির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অঙ্কিত বলেন, ‘‘প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও ওই বস্তুটি বার করা যায়নি। ফরসেপের মাধ্যমে যত বারই সেটিকে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, তত বারই ফস্কে যাচ্ছিল।’’
তখন আপাতত বস্তুটি বার না করার সিদ্ধান্ত নেন ইএনটি বিভাগের প্রবীণ চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত। তিনি জানান, ওই দিন বালককে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। পরের দিন অরুণাভের নেতৃত্বে অঙ্কিত, শতদল মণ্ডল-সহ অন্য চিকিৎসক ও অ্যানাস্থেটিস্ট শর্মিলা ঘোষ ও শ্রীপূর্ণা মণ্ডলের দল ফের ব্রঙ্কোস্কোপি করে। কিন্তু, ব্যর্থ হন তাঁরা। পরে অস্ত্রোপচারের একটি সরঞ্জামকে বিশেষ ভাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেন শতদল। পাতলা পাতের ওই সরঞ্জামটি বাঁকিয়ে আংটার মতো করে বালকের ফুসফুস থেকে চুম্বকটি বার করা হয়। অরুণাভ বলেন, ‘‘এমন ভাবে আংটা তৈরি হয়, যাতে চুম্বকটি পিছন দিক থেকে টেনে তোলা যায়। পর পর দু’দিন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলা প্রক্রিয়ায় অ্যানাস্থেটিস্টদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’’ এখন সুস্থ ওই বালক।