Dengue

মশার কামড়ে কি মাটি হবে পুজোর আনন্দ, চিন্তা

সম্প্রতি চলতি বছরের ৩৮তম সপ্তাহে রাজ্যের ডেঙ্গি আক্রান্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালে কলকাতায় এই সপ্তাহে মোট আক্রান্ত ছিলেন ১০৫২ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৫৮
Share:

মশার বাড়বাড়ন্ত। প্রতীকী ছবি।

এ বার পুজোয় মশা থেকে সাবধান!

Advertisement

দিনে ডেঙ্গি ও রাতে ম্যালেরিয়ার মশার কামড়ে বিদ্ধ হতে পারেন দর্শনার্থীরা। অতিমারির পরে, চলতি বছরের দুর্গাপুজোর মরসুমে এমনই জোড়া ফলার খোঁচার আশঙ্কা করছেন খোদ চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে যে ভাবে ডেঙ্গির লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, তা বড় বিপদের অশনি সঙ্কেত দিচ্ছে। পুজোর ক’দিন জমা জল, জঞ্জাল সাফাই ঠিক মতো না হলে মশার বাড়বাড়ন্ত হবে।

স্বাস্থ্য ভবন জানিয়ে দিয়েছে, গোটা অক্টোবর, অর্থাৎ দুর্গা ও কালীপুজোর মরসুমে তো বটেই, নভেম্বরের গোড়া পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গির দাপট চলবে। তাই পুজোয় মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের কর্মসূচিতে ফাঁক চায় না নবান্নও। চিকিৎসক মহলের একাংশের প্রশ্ন, ‘‘পুজোর কয়েকটি দিন ডেঙ্গিকে উপেক্ষা করে আনন্দে মেতে উঠলে বড় বিপদ ডাকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না তো?’’

Advertisement

সম্প্রতি চলতি বছরের ৩৮তম সপ্তাহে রাজ্যের ডেঙ্গি আক্রান্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালে কলকাতায় এই সপ্তাহে মোট আক্রান্ত ছিলেন ১০৫২ জন। এ বার সংখ্যাটা ১৫২৫। এক সপ্তাহে ৪৬৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। একই ভাবে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনাতেও উদ্বেগ বেড়েছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মাস্কের ব্যবহার ও দূরত্ব-বিধি মেনে চলাই ছিল একমাত্র পথ। কিন্তু ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচতে বাড়িতে এবং এলাকায় সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ, পুজোয় সকাল থেকে রাতভর রাস্তায়, মণ্ডপে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।

সংক্রামক রোগের চিকিৎসক অমিতাভ নন্দীর কথায়, ‘‘ডেঙ্গির মশা দিনে এবং ম্যালেরিয়ার মশা রাতে কামড়ায়। তাই, রাতে ঘুমোনোর সময়ে মশারি ব্যবহার করতে হবে। দিনেও সাবধান থাকতে হবে। যদি কয়েক দিন ধরে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়, তা হলেই সমস্যা বাড়বে।’’ তাঁর মতে, অক্টোবর তো বটেই, নভেম্বর কাটিয়ে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গির দাপট থাকতে পারে।

চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্তারাও জানাচ্ছেন, পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে বাড়িতে কোথাও জল জমিয়ে না রাখা এবং মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর কথা ভুললে হবে না। চিকিৎসকেরা আরও জানাচ্ছেন, বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন জায়গায় জল জমছে। তাতে মশার বংশবিস্তার ঘটছে। প্রবল বর্ষণ না হওয়ায় লার্ভা ধুয়ে বেরিয়েও যাচ্ছে না। তাই ডেঙ্গির দাপট ক্রমশ বাড়ছে।

দশমীর পরের সময়টা নিয়েও চিন্তিত জনস্বাস্থ্য চিকিৎসকেরা। এই বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘পুজোর সময়ে সাবধান থাকতে হবে, এটা যেমন ঠিক, তেমনই পুজোর পরেও পরিচ্ছন্নতার দিকে সমান নজর দিতে হবে। কারণ, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে বিভিন্ন মণ্ডপের কাঠামোয় ও রাস্তায় পড়ে থাকা খাবারের পাত্রে জল জমবে। ডেঙ্গির মশা অল্প জলেই জন্মায়। তাই পুজোর আনন্দ কয়েক দিনের মধ্যে বিষণ্ণতা ডেকে না আনে, সে দিকে সজাগ থাকতে হবে।’’ পুজোয় যদি কারও সামান্য জ্বরও আসে, তা হলেও সেটিকে রাত জেগে ঠাকুর দেখার ফল না ভেবে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন অনির্বাণ। চিকিৎসকেরা আরও একটি দাবি করছেন। তা হল, প্রতিটি মণ্ডপে এবং তার আশপাশের চত্বরে নিয়মিত মশা মারার তেল ছড়াতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement