উদ্ধার হওয়া জাল বিদেশি ভদকা, স্কচের বোতল। -নিজস্ব চিত্র।
ফেসবুক এবং অনলাইনে রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে জাল বিলিতি মদের ব্যবসা চলছিল রমরমিয়ে। সল্টলেক, বেহালাবা নিউটাউন— সর্বত্রই মদের ভাল মতো গ্রাহক রয়েছেন। তাঁদের টার্গেট করেই চলছিল জাল বিদেশি মদের ওই কারবার।
তিলজলায় এ রকমই একটি জাল মদের ঠেকে সোমবার রাতে হানা দিলেন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এবং এনফোর্সমেন্ট শাখার গোয়েন্দারা। তিলজলার ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল প্রচুর পরিমাণে জাল বিদেশি মদ, সঙ্গে বটলিং-এর যন্ত্রপাতি এবং বিদেশি মদের জাল স্টিকার। পুলিশ তিলজলা থানা এলাকার কুষ্ঠিয়া রোডের দোতলার ওই ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করেছে জাল মদ চক্রের অন্যতম চাঁই মহম্মদ দস্তগীর আলম এবং তাঁর তিন সহযোগী বিপিন বাল্মিকী, তাপস হালদার এবং ক্রিষ্টোফার কারডোজকে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে মদের হোম ডেলিভারি যথেষ্ট জনপ্রিয়। ফেসবুক এবং অনলাইন বিভিন্ন সাইটে ওরা মদের হোম ডেলিভারির বিজ্ঞাপন দিত। গ্রাহকদের বলা হত, তাদের কাছে বিমানবন্দর এবং রাজ্যের বিভিন্ন বন্দর থেকে চোরা পথে জোগাড় করা অনেক নামী ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ রয়েছে। মূলত সিঙ্গল মল্ট স্কচ এবং ভদকা। গ্রাহকদের লোভ দেখানোর জন্য এরা বলত, যেহেতু চোরা পথে আনা তাই বাজার দামের থেকে অনেক কম দামে মিলবে ওই বিদেশি মদ।
জাল বিদেশি মদের বটলিংয়ের যন্ত্রপাতি। -নিজস্ব চিত্র।
সেই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই ওই মদ কিনতেন কম দামে। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, তাদের গ্রাহকদের বড় অংশই সল্টলেক, নিউটাউন এবং বেহালা এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন- অল্প কথা, সঙ্গে টাকা, কাগজে মোড়া বোতল হাজির নিমেষে
আরও পড়ুন- মার্কিন ধাঁচে মদে বিশুদ্ধতা চায় নবান্ন
পুলিশ সূত্রে খবর, এরা আসলে বিদেশি মদ বাজার থেকে কিনে সেখান থেকে মদের একটা বড় অংশ বার করে নিত। তার পর সেই বোতলে মিশিয়ে দিত বাজার থেকে কেনা অ্যালকোহল বা সস্তার মদ। তারপর অবিকল আসলের মতো সিল করে দিত, যাতে গ্রাহক বুঝতেই পারতেন না। শুধু তাই নয়, নামী বিদেশি ব্র্যান্ডের মদের ফাঁকা বোতল বিভিন্ন হোটেল রেস্তরাঁ থেকে কিনে এনে সেই বোতলে দামি মদের সঙ্গে সস্তার মদ মিশিয়ে বিক্রি করত এরা। নিজেরাই ছাপিয়ে নিয়েছিল মদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টিকার।
গত বছরের মাঝামাঝি ঠিক এরকমই একটি গ্যাংকে পাকড়াও করেছিল রাজ্য আবগারি দফতর। তারাও মদের হোম ডেলিভারি করত এবং শুল্ক মুক্ত বিদেশি মদ কম দামে বিক্রি করার নামে আসলে বেচত জাল মদ।