প্রতীকী ছবি।
চলতি বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতা পুর এলাকায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের। কলকাতা পুরসভার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহ পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে আটশো। আক্রান্তের তুলনায় মৃতের সংখ্যা কম। কিন্তু মৃতের সেই সংখ্যাও কী বাঞ্ছনীয়? ডেঙ্গিতে মৃত্যু কেন আটকানো যাচ্ছে না? সেই সব প্রশ্নই উঠছে নানা মহলে।
পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০১১-১২ সালে কয়েক হাজার বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার পরেই টনক নড়ে প্রশাসনের। পরবর্তী বছরে সেই সংখ্যা কমেছে। গত বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল হাজার দেড়েক। পুরসভার হিসেবে সে বার মৃত্যু হয়েছিল ছ’জনের।
ডেঙ্গিতে মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, মোট আক্রান্তের এক শতাংশের মৃত্যুর আশঙ্কা থেকেই যায়। সেটা স্বাভাবিকও।’’ যদিও তাঁর দাবি, সেটাও আটকানো সম্ভব। তবে কার গাফিলতিতে তা হচ্ছে না? দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘এ বছরের মৃত্যুগুলি পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, কোনও ক্ষেত্রে সময়ে রক্তের এনএস-১ পরীক্ষা করা হয়নি, কাউকে আবার জ্বরের ছ’দিন পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সব কারণেই বাঁচানো যায়নি আক্রান্তকে।’’
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক ডেপুটি ডিরেক্টরের কথায়, ‘‘এটা ঠিক যে আক্রান্ত কমলেও মৃত্যু হচ্ছে। তা কেন? আসলে ২০১২ সালে কয়েক হাজার মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেও রোগের ধরন তখন জটিল ছিল না। যা এখন হচ্ছে। জ্বরে সঙ্গে বমি, পেট খারাপের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। এ ক্ষেত্রে যে এনএস-১ পরীক্ষা করাতে হবে, সেই পরামর্শ না মেলায় ডেঙ্গির জটিলতা বাড়ছে।’’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্কুল অব ট্রপিক্যালের মেডিসিনের প্রধান বিভূতি সাহা বলেন, ‘‘ডেঙ্গির নতুন নতুন উপসর্গ এখন জটিল আকার নিচ্ছে। তাতে মস্তিষ্ক, যকৃৎ, অগ্ন্যাশয়েও সংক্রমণ ছড়িয়ে ওই অঙ্গগুলিকে নষ্ট করছে। অনেক সময়েই তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’’ তাঁর বক্তব্য, আশার বিষয় এই যে, রাজ্য সরকার ডেঙ্গির জটিল পরিস্থিতিতে চিকিৎসার প্রশিক্ষণও দিচ্ছে। ভবিষ্যতে ওই রোগের চিকিৎসায় যা সাহায্য করবে।