রঞ্জু দাস
ঘুড়ি ধরতে ছুটে কাঁটাতারের বেড়ায় তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের। মৃতের নাম রঞ্জু দাস (১৩)। বাড়ি আগরপাড়া আজাদ হিন্দ নগরে। রবিবার দুপুরের ঘটনা। কাঁটাতারে কী ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটল, তদন্ত করছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রঞ্জুর বাবা দীর্ঘদিন আগে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তার মা, টুসি দাস তিন সন্তানকে নিয়ে আজাদ হিন্দ নগরে বাপের বাড়িতে থাকেন। পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান তিনি। প্রাথমিকের পরে আর পড়াশোনা চালাতে পারেনি রঞ্জু। ছোটখাটো কাজ করে মাকে সাহায্য করত সে।
পরিবার সূত্রে খবর, তার বাবা একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন। বাবা চলে যাওয়ার পরে সেই দোকানেই রবিবার এক বেলা কাজ করে টাকা পেত রঞ্জু। অন্য দিন যা কাজ পেত, তা-ই করত। সে-ই এ বার ভাই-বোনেদের পুজোয় জামা কিনে দেবে বলে জানিয়েছিল।
টুসিদেবী এ দিন জানান, রবিবার দোকানে ভিড় বেশি হয় বলে সাতসকালেই বেরোতে হত। এ দিনও তেমনই বেরিয়েছিল রঞ্জু। স্থানীয়েরা জানান, দুপুর ১২টা নাগাদ কাজ কিছুটা হালকা হলে দোকান ছেড়ে বেরিয়েছিল সে। কাছের বাগানে একটি কাটা ঘুড়ি পড়েছে দেখে সেটি ধরতেই ছোটে ছেলেটি।
ঘুড়িটি আটকে ছিল বেড়ার কাঁটাতারে। সুতো ছিল বেড়ার ভিতরে। সুতো-সহ ঘুড়ি ধরতে বেড়ার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে রঞ্জু। কাঁটাতারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে জ্ঞান হারায় সে। স্থানীয়েরা রঞ্জুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেড়ার তারের সঙ্গেই রয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। সেখানকার একটি তার বেড়ায় স্পর্শ করেছিল। কী করে সেটি সেখানে এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, হুকিংয়ের জন্য খুঁটি থেকে বিদ্যুতের তার টানা হয়েছিল। সেই তারের খোলা অংশ ধাতব কাঁটাতারে এসে পড়েছিল। সেটাই প্রাণ কেড়ে নিল কিশোরের। ছেলেকে হারিয়ে হতবাক টুসিদেবী ভেবে চলেছেন, কার দোষে তাঁর ছেলের প্রাণ গেল।