প্রতীকী চিত্র।
বৃষ্টির শহরে দু’জায়গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দুই যুবকের। বৃহস্পতিবার রাতে হরিদেবপুর থানা এলাকার বিঘা রোডে উদ্ধার হয় মানিক বারুই (৩৬) নামে এক যুবকের দেহ। শুক্রবার পাটুলি থানা এলাকায় মৃত্যু হয় সুজয় মণ্ডল (১৮) নামে এক তরুণের। দু’টি দেহই ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
মানিক পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। তাঁর বাড়ি হরিদেবপুর থানা এলাকার গোপালনগরে। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, তিনি বৃহস্পতিবার রাতে মোটরবাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে বৃষ্টি হচ্ছিল। জোর একটা শব্দ শুনে আশপাশের দোকানদারেরা ছুটে এসে দেখেন, মানিক রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। মাথায় হেলমেট। শরীরের একটি অংশ স্পর্শ করে রয়েছে বিদ্যুতের তার। হরিদেবপুর থানার পুলিশ এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, মানিক যেখানে পড়েছিলেন তার পাশেই বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ছিল। অনুমান, বৃহস্পতিবার দুর্যোগের কারণে তারটি ছিঁড়ে পড়ে যায়। সেটির সংস্পর্শে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মানিক মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়েছিলেন বলে পুলিশের অনুমান।
মানিকের দিদি কাকলি বিশ্বাস বলেন, “ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিতে ভাই বকখালি গিয়েছিল। সেখান থেকেই ফিরছিল। রাতে এই ভাবে বিদ্যুতের তার কেন পড়ে থাকবে?” বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার বিদ্যুতের তারগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল। মানিকের পাঁচ বছরের মেয়ে এবং স্ত্রী রয়েছেন। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
অন্য ঘটনায় শুক্রবার বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ পাটুলি দমকল কেন্দ্রের উল্টো দিকে, এন-৩৬২ বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি টাউনশিপে এক তরুণ অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন বলে খবর আসে পাটুলি থানায়। ফুটপাতে জমা জলের মধ্যে ওই তরুণ বেশ কিছু ক্ষণ পড়ে ছিলেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান সিইএসসি-র কর্মীরা। তখন স্থানীয়েরা বিক্ষোভ দেখান। গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সুজয় মণ্ডল নামে ওই তরুণকে উদ্ধার করা হয়। বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় এ দিন জমা জলে মাছ ধরছিলেন। অনুমান করা হচ্ছে, সেই সময়ে কোনও ভাবে বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি।
সিইএসসি-র তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের ইঞ্জিনিয়ারেরা পরিদর্শন করে দেখেছেন, এলাকার মাটির উপরে যে তার রয়েছে, সেগুলি অক্ষত রয়েছে। আর্থিং-এর একটি তার ছিঁড়ে পড়েছিল, তবে আর্থিং-এর তারে বিদ্যুৎ থাকে না। তাই ওই যুবকের কী ভাবে মৃত্যু হল, তা তাদের তরফেও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ দিন কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম জানান, অবৈধ হুকিংয়ের জেরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তিনি সিইএসসি-কে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।