প্রতীকী ছবি।
সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল সল্টলেকের বিবি ব্লকে। মঙ্গলবার বেলার দিকে ওই চিকিৎসকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয় বিবি-২১০ নম্বর বাড়ির একতলা থেকে। এই ঘটনার মধ্যে কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চিকিৎসকের দেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, বেলেঘাটার বাসিন্দা ওই চিকিৎসকের নাম প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় (৪৩)। এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন তিনি। সল্টলেকে প্রসেনজিতের জেঠুর বাড়ির একতলা থেকে এ দিন তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, দেহে পচন ধরায় পোকা ধরে গিয়েছিল। বাড়ির একতলার একটি ঘরের মেঝেতে দেহটি পড়ে ছিল। দু’দিন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পরে এ দিন খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘর খুলে দেহটি উদ্ধার করে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই চিকিৎসকের। পুজোর সময়ে তিনি ২১০ নম্বর বাড়িতে এসেছিলেন। দশমীর পর থেকে তাঁর হদিস পাচ্ছিলেন না কেউ। শেষ পর্যন্ত এ দিন তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। এ দিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেটি পুরোপুরি বন্ধ। কেয়ারটেকার মাধাই প্রামাণিক জানান, পুজোর সময়ে প্রসেনজিৎ ওই বাড়িতে এসেছিলেন। একতলায় থাকতেন তিনি। দশমী পর্যন্ত বাড়ির জানলা খোলা ছিল। দশমীর পর থেকে ঘরের জানলা বন্ধ দেখেন মাধাই। তিনি বলেন, ‘‘দাদা মাঝেমধ্যে আসতেন। চলে যাওয়ার সময়ে লোহার গেটের ভিতরের দিকে তালা দিয়ে যেতেন। তাই আমাদের প্রথমে কোনও সন্দেহ হয়নি। কিন্তু সোমবার থেকে খুব দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। আমরা ভেবেছিলাম, ইঁদুর মরেছে। কিন্তু দুর্গন্ধ না কমায় শেষ পর্যন্ত পাড়ার লোকজনকে বিষয়টি জানাই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, প্রসেনজিতের জেঠু বেঙ্গালুরুতে থাকেন। কেয়ারটেকার প্রথমে তাঁকেই ফোন করেছিলেন। পরে তাঁর স্ত্রী খবর পেয়ে বাড়ির লোকজনকে নিয়ে এ দিন সকালে পৌঁছন। তাঁদের উপস্থিতিতেই একতলার ঘরের তালা খুলে পুলিশ প্রসেনজিৎকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে।
মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, প্রসেনজিৎ এক বার কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার পরেই তাঁর হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতাও ছিল তাঁর। তাই প্রাথমিক ভাবে তাঁর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, প্রসেনজিতের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। বাহ্যিক ভাবে আত্মহত্যারও কোনও চিহ্ন মেলেনি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।