প্রতীকী ছবি।
খোরপোষের দাবিতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কসবার বাসিন্দা রথীন্দ্রকুমার বসু। মঙ্গলবার ছিল দু’পক্ষের শুনানির প্রথম দিন। প্রথম দিনেই সেই মামলার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে তাঁর বড় বৌমা আদালতের সামনে জানিয়ে দিলেন মামলায় যেতে চান না। শ্বশুরমশাইয়ের যাবতীয় খোরপোষ তিনি বহন করবেন।
ঘটনার সূত্রপাত বছর কয়েক আগে। একটি জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থায় কর্মরত রথীন্দ্রকুমার বসু অসুস্থতার কারণে ২০০৮ সালে অবসর নেন। পরিবর্তে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজটি পান তাঁর বড় ছেলে অমিতকুমার বসু। আর রথীন্দ্রনাথবাবু পেনশন বাবদ ১৫০০ টাকার মতো পেতে শুরু করেন। এর পরে তিনি বাড়ির একতলায় ছোট ছেলের সঙ্গে থাকতেন। দোতলা বড় ছেলের নামে লিখে দেওয়ায় তিনি আলাদা হয়ে গিয়ে সেখানেই থাকতেন। ২০১৬ সালে রথীন্দ্রনাথবাবুর বাইপাস সার্জারি হয়। এ ছাড়াও নানা অসুখে ভোগায় পেনশনের টাকায় তিনি নিজের খরচ আর চালাতে পারছিলেন না। নিরাপত্তারক্ষী সংস্থার কর্মী ছোট ছেলের পক্ষেও বাবার ওষুধের খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না।
অভিযোগ, চলতি বছর জুলাই মাসে দোতলা বাড়ির পুরোটাই নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য বড় ছেলে বাবাকে চাপ দিতে থাকেন। তখনই তাঁকে বড় ছেলে মারধর করেছে বলে কসবা থানায় অভিযোগও করেন রথীন্দ্রনাথবাবু। ওই মাসেই আদালতে খোরপোষের আবেদন জানান তিনি।
মঙ্গলবার শুনানির প্রথম দিনেই রথীন্দ্রনাথবাবু বড় বৌমা নীলিমা বসু তাঁর আইনজীবী দীপিত বসুর মাধ্যমে আদালতকে জানান, এই মামলা চালিয়ে নিয়ে যেতে চান না। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। তাই এ বার থেকে শ্বশুরের ওষুধ, খাওয়াদাওয়ার খরচ বাবদ খোরপোষের দায়িত্ব তিনিই নেবেন। পাশাপাশি রথীন্দ্রনাথবাবুকে হাতখরচ বাবদ ২০০০ টাকা করে দেবেন বলেও জানান।
আইনজীবী দীপিত বসু অবশ্য রথীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে এবং বৌমার তিক্ত সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী ছেলে বেকার হলেও বাবা-মায়ের খোরপোষ দিতে বাধ্য। কিন্তু বৌমা নন। চাইলে নীলিমাদেবী রথীন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে পাল্টা মানহানির মামলা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি নিজে থেকেই রবীন্দ্রনাথবাবুর যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন।’’