কে
শ্রী শ্রী জগদীশ্বরী কালীমাতা ঠাকুরাণী। ভবতারিণী।
কেন
শ্রীরামকৃষ্ণের অবিরত আকুতি ‘দেখা দে মা’ শুনে পাথরের মূর্তি থেকে কালিকা বেরিয়ে এসেছিলেন চিন্ময়ী রূপে। জগদীশ্বরী মায়ের সেই রূপ প্রত্যক্ষ করেছিলেন পুত্র গদাধর। অর্থকষ্টে উদ্বিগ্ন শিষ্য যুবক নরেন্দ্রনাথকে শ্রীরামকৃষ্ণ পাঠিয়েছিলেন তাঁর মায়ের কাছে অর্থ চাইতে। বিহ্বল নরেন টাকাপয়সা চাইতে পারেননি। বারবার গিয়ে একই কথা বলেছিলেন, ‘‘বিবেক দাও! বৈরাগ্য দাও! জ্ঞান দাও! ভক্তি দাও!’’
কোথায়
দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির ও দেবোত্তর এস্টেট, কলকাতা-৭০০০৩৫
কখন
১৮৫৫ সালের ৩১ মে স্নানযাত্রার দিন মন্দিরের আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণি। কলকাতার রক্ষণশীল সমাজ ‘শূদ্র’-প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে ব্রাহ্মণের পূজা করা নিয়ে আপত্তি তোলে। হুগলির কামারপুকুর থেকে রামকুমার চট্টোপাধ্যায়কে পৌরোহিত্যের কাজে নিয়োগ করেন রাসমণি। এক বছরের মধ্যেই রামকুমার তাঁর ভাই গদাধরকে নিয়ে আসেন পুজোর কাজে সহায়তার জন্য। গদাধরই যুগাবতার শ্রীরামকৃষ্ণ। তাঁর আকর্ষণে এই মন্দির দেবালয় থেকে পরিণত হয় মহামানবের মহাতীর্থে। এই মন্দিরে এসেছেন মাইকেল মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র, গিরিশ ঘোষ, কেশব সেনরা। মহাসমারোহে কালীপূজা উদ্যাপিত হয় অগণিত মানুষের সমাগমে।
এখন
কলকাতা-বিশেষজ্ঞ হরিপদ ভৌমিক জানাচ্ছেন, দক্ষিণেশ্বর এক অতি প্রাচীন শক্তিসাধন ক্ষেত্র। বঙ্গের কালীক্ষেত্রের উত্তর প্রান্ত হল দক্ষিণেশ্বর। তবে সেই ক্ষেত্রের সঙ্গে রানি রাসমণি প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরের কোনও পরম্পরাগত যোগ নেই। তা হলে কেন এখানেই স্থাপিত হয়েছিল মন্দির? কেন শ্রীরামকৃষ্ণের মতো সাধকের সিদ্ধি ঘটল সেখানে? এ সব প্রশ্ন এখনও ভাবায় চিন্তক ও গবেষকদের। ১৫৫ বছর ধরে এখানে পূজিতা জগদীশ্বরী ভবতারিণী। এ বছরও সেই পুজো হবে। দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির ও দেবোত্তর এস্টেটের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী জানাচ্ছেন, এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশিকা কঠোর ভাবে বজায় রেখে পুজো হবে।