Crime

থানায় ঢুকে পুলিশকে মার, ওসির ভূমিকায় অসন্তুষ্ট কমিশনার, অভিযুক্তদের ধরতে মাঠে গুন্ডা দমন শাখা

সকাল থেকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যপারে কেন থানা নিষ্ক্রিয় রইল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ১৯:৫১
Share:

পুলিশের উর্দি ধরে টানছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

নরম মনোভাব নয়। টালিগঞ্জ থানায় ঢুকে পুলিশকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন নগরপাল অনুজ শর্মা। থানার ওসি যেভাবে রবিবার রাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন, তা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, বিভাগীয় ডিসি মীরাজ খালিদের ভূমিকাতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন কমিশনার।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরে গোটা ঘটনার রিপোর্ট বিভাগীয় ডিসি-র কাছে চেয়ে পাঠান পুলিশ কমিশনার। অন্যান্য সূত্র মারফৎ তাঁর কাছে খবর আসে যে, টালিগঞ্জ থানায় তাঁর বাহিনীকে হেনস্থা করা হয়েছে। এক শীর্ষ পুলিশ কর্তার ইঙ্গিত, ঘটনাটি যে এতটা বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ তার আঁচ বিভাগীয় ডিসি-র কাছ থেকে পাননি নগরপাল। সে কারণেই ক্ষুব্ধ তিনি।সূত্রের খবর, থানার ওসি গোটা বিষয়টি ‘মিটে গিয়েছে’ বলে রিপোর্ট দেন ডিসি-কে। ফলে সকাল পর্যন্ত ঘটনার কোনও পরিষ্কার চিত্র ছিল না ডিসি-র কাছেও।

সোমবারদুপুরে ঘটনার কথা জানার পরেই একদিকে যেমন অনুজ শর্মা ডিসি (দক্ষিণ)-র কাছে রিপোর্ট চান, তেমনই যুগ্ম কমিশনার মুরলীধর শর্মাকে আলাদা ভাবে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।এর পরেই টালিগঞ্জ থানায় পৌঁছন যুগ্ম কমিশনার। সূত্রের খবর, যুগ্ম কমিশনার টালিগঞ্জ থানার ওসি এবং রবিবার রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে গোটা ঘটনার কথা শোনেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার টালিগঞ্জ থানার অতিরিক্ত ওসি ছুটিতে ছিলেন। ওসি ছিলেন থানায়।কড়া হাতে হামলার মোকাবিলা না করার পাশাপাশি, এ দিন সকাল পর্যন্ত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করতে কেন গড়িমসি করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সূত্রের খবর, কনস্টেবল বিমান দাস, যাঁকে বাইরে থেকে মারধর করে থানার ভিতর নিয়ে যায় হামলাকারীরা, তাঁর অভিযোগক্রমে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ দিন আলিপুর আদালতে সেই এফআইআর জমাও পড়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: টালিগঞ্জ থানায় ঢুকে জনতার তাণ্ডব, আবারও জুজু পুলিশকে দেখল কলকাতা​

আরও পড়ুন: ইদের নামাজ মিটতেই থমথমে কাশ্মীর, বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভের কথা মানল কেন্দ্র​

কিন্তু তারপরেও সকাল থেকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যপারে কেন থানা নিষ্ক্রিয় রইল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, শুধু হামলা রোখা নয়, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যাপারেও থানার গড়িমসি নিয়ে স্পষ্টতই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শীর্ষ পুলিশ কর্তারা। লালবাজার সূত্রে খবর, গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখাকে অভিযুক্তদের ধরার ব্যপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিকেলেই ওই শাখার আধিকারিকরা টালিগঞ্জ থানায় যান। থানার অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের খোঁজে সন্ধ্যা থেকেই হানা দেন চেতলার বিভিন্ন এলাকায়।

সূত্রের খবর, থানার বাইরে পুলিশ কনস্টেবলকে মারতে মারতে টেনে নিয়ে যাওয়ার যে ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে, সেখান থেকে আকাশ এবং গুল্লু নামে দুই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। দু’জনেই ১৭ বি চেতলা রোডের বস্তির বাসিন্দা। এলাকায় বিভিন্ন ধরনের গণ্ডগোলে এর আগেও দু’জনের নাম উঠে এসেছে। সোমবার সন্ধ্যায় গুণ্ডা দমন শাখা বড় বাহিনী নিয়ে ওই বস্তিতে হানা দেয়। কিন্তু সেখানে পুলিশকে প্রবল বাধার মুখে পড়তে হয়। মূলত মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সেই সুযোগে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement