কলকাতা পুরসভার একটি ওয়ার্ড যে খালি পড়ে রয়েছে— পুরভবন কি তা ভুলে গিয়েছে, না ভুলে যেতে চাইছে!
কলকাতা পুরসভার কোনও আসন খালি রয়েছে কি না, তা জানতে সম্প্রতি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এক চিঠি পুরসভায় পৌঁছনোর পরে জবাব দেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু পুর প্রশাসন জবাব দেয়নি। প্রশ্ন তাতেই। যদিও পুরসভার কোনও অফিসারই জবাব দিতে চাননি। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা আমার দায়িত্ব নয়। আমি তো আর নির্বাচন দেখি না!’’
কলকাতা পুরসভার ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তৃণমূলের শৈলেন দাশগুপ্ত। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মারা যান শৈলেনবাবু। পুর আইন অনুসারে কোনও ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের মত্যু হলে এক মাসের মধ্যে তা জানাতে হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। এ ক্ষেত্রে ৬ মাস হতে চললেও কমিশনকে ওয়ার্ড খালি থাকার কথা জানানো হয়নি। পুরমহলের গুঞ্জন, প্রার্থী নিয়ে বিতর্ক হতে পারে ভেবে এখনই ওই ওয়ার্ডে নির্বাচন চাইছে না শাসক দল।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, পুরসভা, পঞ্চায়েতে কোনও নির্বাচিত জন প্রতিনিধির মৃত্যু হলে তা লিখিত ভাবে জানাতে হয় কমিশনের কাছে। সেই রিপোর্ট পেয়ে কমিশন ওই আসনে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, কোথাও কোনও আসন খালি থাকলে তা জানাতে বলা হয়েছিল আগেই। কলকাতা পুরসভার পার্সোনেল দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুরসভার কাছে কমিশনের চিঠিও এসেছিল। ১২ জুনের সেই চিঠি পুরসভার পদস্থ কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল কলকাতা পুর এলাকায় কোনও আসন খালি থাকলে ১৯ জুনের মধ্যে তা জানানো হোক। ওই তারিখের মধ্যে জবাব না দিলে ধরে নিতে হবে পুরসভায় কোনও আসন খালি নেই।
বস্তুত ১৯ জুনের মধ্যে কোনও জবাব পুরসভা থেকে দেওয়া হয়নি। কমিশনের এক অফিসার জানান, সে ক্ষেত্রে ধরে নিতেই হবে কলকাতায় কোনও আসন খালি নেই। বুধবারই সরকার রাজ্যের ৭টি পুরসভার নির্বাচনের একটা দিন স্থির করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছে। কলকাতা পুরসভা ওই ওয়ার্ড খালি থাকার কথা জানালে সেখানেও ভোটের ব্যবস্থা করা যেত বলে মনে করছেন কেউ কেউ। প্রশাসনিক দিক থেকে বিষয়টা যে ঠিক হচ্ছে না, তা মানছেন অফিসারেরাও।
এ দিকে, ভোট না হওয়ায় ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পুরসভার অফিসারেরা। কারণ রাস্তাঘাট, নিকাশির উন্নয়ন থেকে রেশন কার্ড, শংসাপত্র পাওয়া— সবেতেই কাউন্সিলরের ভূমিকা প্রধান।