বিজন সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার অপেক্ষা। —ফাইল চিত্র
শহরের প্রায় সব সেতু এবং উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলেও এখনও হয়নি বিজন সেতুর। যার অন্যতম যুক্তি ছিল, ওই সেতুর যান চলাচলে ব্যস্ততা। তাই লকডাউনের মধ্যে যাতে সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যায়, তেমন পরিকল্পনা করেছিলেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিক আনাতে বাধা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আন্তর্জাতিক বিধি ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কায় পিছিয়ে গেল সেই পরিকল্পনাও।
কেএমডিএ-র সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সদস্য জানান, উড়ালপুল বা সেতু পরীক্ষার আন্তর্জাতিক যে নিয়ম রয়েছে, তাতে উল্লেখ আছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা টানা ৭২ ঘণ্টা ধরে করতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে তার কিছু কম হতে পারে। কিন্তু অনেক দিন সময় নিয়ে ধীরে ধীরে কম শ্রমিক ব্যবহার করে উড়ালপুল বা সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা কোনও ভাবেই করা যাবে না।
মূল বাধা এখানেই। কারণ, ৭২ ঘণ্টা টানা পরীক্ষা করতে তিনটি শিফটে শ্রমিক লাগবে। প্রতি শিফটে প্রায় ১৫ জন শ্রমিক লাগে বলে জানাচ্ছে সংস্থা। লকডাউনের মধ্যে এক জায়গায় এত দক্ষ শ্রমিকের জোগান পাওয়া অসুবিধার। তা ছাড়া, সেটা প্রশাসনের নির্দেশ ভঙ্গ করা হবে। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই সেতুর নীচে লোহার খাঁচা তৈরি এবং কিছু প্রযুক্তিগত কাজ বাকি রয়েছে।
কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দিল্লি এবং কলকাতার দু’টি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। ৭২ ঘণ্টা থেকে বেশি সময় নিয়ে ধীরে ধীরে কম শ্রমিক ব্যবহার করার কথাও ভাবা হয়েছিল। কিন্তু দুই সংস্থাই এই মুহূর্তে ওই কাজ করতে কেএমডিএ-র কাছে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, বছর আড়াই আগে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরেই কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শহরে তাদের নির্মিত সেতুগুলির অবস্থা যাচাই করতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। শহর এবং শহরতলির ১৫টি উড়ালপুল এবং সেতু পরীক্ষার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। ১১টির পরীক্ষা হয়ে গেলেও পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় বিজন সেতুর পরীক্ষা হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিজন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাকি রয়েছে। যানবাহনের চাপের জন্যই মূলত এত দিন পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই লকডাউনের সময়ে সব নিয়ম মেনে ন্যূনতম শ্রমিক নিয়োগ করে আধুনিক প্রযুক্তিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক নিয়ম মানতে গেলে অনেক শ্রমিক লাগবে। সেটা করতে গেলে লকডাউনের নিয়ম ভাঙা হবে। ফলে পরিকল্পনা করেও বন্ধ করে দিতে হল।”