ফাইল চিত্র।
অনেক সময়েই দেখা যায়, রোগী হয়তো হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক রোগ নিয়ে। কিন্তু দিন কয়েক পরে হাসপাতাল থেকেই নতুন আর এক সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। তখন সমস্যা জটিল হয়। অতিমারির পরিস্থিতিতেও এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণে এ বার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থাপনা চালুর নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য মহল সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালেই পরিষেবার গুণগত মানের উন্নয়নে ‘কোয়ালিটি অ্যাশিয়োরেন্স’ কর্মসূচি চলে। যার অধীনে রয়েছে রাজ্যের সুশ্রী প্রকল্প। সেই প্রকল্পে জেলা, মহকুমা, গ্রামীণ, স্টেট জেনারেল, ব্লক ও প্রাথমিক স্তরের হাসপাতালগুলিতে ইতিমধ্যেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কমিটি তৈরি করে কাজ চলছে। কিন্তু বাকি ছিল মেডিক্যাল কলেজগুলি। রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে এ বার সেখানেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজরদারি চালাতে চায় স্বাস্থ্য দফতর।
প্রথম পর্যায়ে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজেরই লেবার রুম এবং প্রসূতিদের জন্য নির্দিষ্ট অপারেশন থিয়েটারের উপরে নজর দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, “একবারে গোটা হাসপাতালে প্রকল্পটি চালু করতে গেলে সমস্যা হতে পারে। তাই প্রথম পর্যায়ে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যের উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে। আগামী দিনে গোটা হাসপাতালেই প্রকল্পটি চালু করা হবে।”
বৃহস্পতিবার জারি হওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে মেডিক্যাল কলেজগুলির লেবার রুম এবং প্রসূতি অপারেশন থিয়েটারে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তিনটি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকারী দল এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এক জন নার্সকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব বেঁধে দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের সুপার এবং প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, স্ত্রী-রোগ ও অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের প্রধান চিকিৎসক বা তাঁদের অনুমোদিত অন্য চিকিৎসক, নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স, ডেপুটি ও সহকারী সুপার-সহ মোট ১১ জন থাকবেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকারী দলে থাকবেন সাত জন সদস্য। লেবার রুম, প্রসূতি অপারেশন থিয়েটারের টেবিল, দরজার হাতল, রোগীর শয্যা থেকে শৌচাগার— সর্বত্র সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া, কোনও সংক্রমণের হদিস মিললে সেটি ভাইরাস না ব্যাক্টিরিয়াঘটিত, তা নির্ধারণ করে তালিকা তৈরি করা, খাবার পরিবেশনকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, চিকিৎসক থেকে নার্স ও কর্মীদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা এবং চিকিৎসা বর্জ্য নিষ্কাশন-সহ অন্য সমস্ত বিষয়ের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে কমিটি ও দলের মধ্যে। পাশাপাশি, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিশেষ দায়িত্বে থাকছেন এক জন নার্স। এক স্বাস্থ্যকর্তা বললেন, “হাসপাতালগুলি ওই কমিটি তৈরির পরে সদস্যদের সকলকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”