Health

পুজোর ভিড়ই ডাকবে বিপদ, আতঙ্কে পুলিশ

পুলিশকর্মীদের অনেকে ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যেই আবার কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩৬
Share:

ঘেঁষাঘেঁষি: দূরত্ব-বিধি লঙ্ঘন বহির্বিভাগের টিকিট নেওয়ার লাইনে। মঙ্গলবার, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

অতিমারির পরিস্থিতিতে পুজো দেখতে যত বেশি ভিড় হবে, সংক্রমণের আশঙ্কাও তত বাড়বে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তাই আতঙ্কে পুলিশকর্মীদের একটি বড় অংশও। কারণ, পুজোয় তাঁদের রাস্তায় নেমে কাজ করতে হয়। পুলিশকর্মীদের অনেকে ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যেই আবার কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

লালবাজার সূত্রের খবর, ভিড় সামাল দিতে এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ বছর তৃতীয়া থেকেই পথে নামতে পারে কলকাতা পুলিশ। ট্র্যাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতেও ওই বাহিনী কাজ করবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, বড় বড় পুজোমণ্ডপের পাশাপাশি শহরের যে সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভিড় বেশি হয়, সেখানে ওই দিন থেকেই বাহিনীকে মোতায়েন করা হবে।

আরও পড়ুন: বইপ্রেমীদের জন্য এ বার ই-বুক নিয়ে আসছে আনন্দ পাবলিশার্স​

Advertisement

অন্যান্য বার পঞ্চমী থেকে পথে নামে পুলিশ। লালবাজারের হিসেব অনুযায়ী, পঞ্চমী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিদিন ১৮ হাজারের মতো পুলিশকর্মীকে মোতায়েন রাখা হয়। এ বারও সংখ্যাটা কমবেশি তেমনই থাকবে। পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ওই সংখ্যার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশকে তৃতীয়া থেকেই রাস্তায় নামানো হবে।’’ প্রসঙ্গত, পুজোয় সংক্রমণ এড়াতে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, এ বার তৃতীয়া থেকেই লোকজন পুজো দেখতে পারবেন।

তবে, কর্তাব্যক্তিদের এই সিদ্ধান্তে প্রমাদ গুনছেন নিচুতলার পুলিশকর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা, জনজোয়ার সামলাতে গিয়ে বহু মানুষের সংস্পর্শে আসার ফলে পুলিশকর্মীদের অনেকেই সংক্রমিত হয়ে পড়বেন। তাই পুজোয় ভিড় ও যানজট সামলানোর পাশাপাশি নিজেদের সংক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখাটাও পুলিশের বড় চিন্তার বিষয়।

আরও পড়ুন: ‘ডিজ়িজ় এক্স’ প্রতিরোধে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য

এ নিয়ে চিন্তায় পুলিশকর্তারাও। ইতিমধ্যেই বাহিনীর ২৬০০ জনেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে ওঠা পুলিশকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৪০০। এর মধ্যেই কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে ফের দ্বিতীয় দফায় করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে পুলিশকর্মীদের মধ্যে। গত তিন সপ্তাহে সেখানে নতুন করে ৪০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম দফায় গত অগস্ট পর্যন্ত সেখানে ২৫০ জনেরও বেশি পুলিশকর্মী আক্রান্ত হয়েছিলেন।

লালবাজার জানিয়েছে, পুজোর ডিউটি করার সময়ে করোনা-বিধি মেনে চলতে হবে প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে। স্বাস্থ্য দফতর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে মাস্ক, ফেস শিল্ড পরে থাকতে হবে তাঁদের। এ ছাড়া, সঙ্গে স্যানিটাইজ়ারও রাখতে হবে। লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতার পুলিশ কমিশনার পুজোর আগে বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দেবেন, কী কী বিধি মেনে পুজোর সময়ে পুলিশকর্মীদের কাজ করতে হবে। পুজো কমিটিগুলিকেও বলে দেওয়া হয়েছে, করোনা-নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য।

কিন্তু তাতেও কি করোনা আটকানো যাবে? নিচুতলার এক পুলিশকর্মী জানান, এপ্রিল মাসের পর থেকে পুলিশের মধ্যে ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। লকডাউন বা করোনা নিয়ে কড়াকড়ি শিথিল হতেই সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হয়ে যায় বাহিনীতে। এ বার পুজোর ডিউটি করতে গিয়ে কত জন অসুস্থ হয়ে পড়েন, তা ভেবেই আতঙ্কে তাঁরা।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement