প্রতীকী ছবি।
লালবাজার ট্র্যাফিক বিল্ডিংয়ের বেশ কয়েক জন কর্মী এবং অফিসার এ বার করোনায় আক্রান্ত হলেন।
এঁরা সকলেই ট্র্যাফিক বিভাগে কর্মরত। সূত্রের খবর, বুধবার পর্যন্ত ওই বিভাগের ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুম, রিজার্ভ অফিস-সহ বিভিন্ন শাখার সাত জন পুলিশকর্মীর লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের ভর্তিও করানো হয়েছে।
এ দিনই ট্র্যাফিক বিভাগের আরও কয়েক জন আধিকারিকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। শুধু এ দিনই বাহিনীর মোট ৩০ জন কর্মী করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।
একই বিল্ডিংয়ে এত জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিকেরা স্বভাবতই চিন্তায় পড়েছেন।
সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য ইতিমধ্যেই রিজার্ভ অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই বিল্ডিংয়ে থাকা ট্র্যাফিক বিভাগের বিভিন্ন শাখায় ন্যূনতম সংখ্যক কর্মীকে আসতে বলা হয়েছে। এমনকি, কয়েকটি অফিসের এসিও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন শাখার কর্মীদের ডিউটিতে বদল আনা হয়েছে। কর্মীদের নিয়ে দু’টি দল তৈরি করা হয়েছে। এক বারে একটি দলই ডিউটি করবে। যাতে দলের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে অন্য দল দিয়ে কাজ চালাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্যই এই পদ্ধতি।
আরও পড়ুন: নিজের সঙ্গেই যুদ্ধে জয়ী কৃতী ছাত্রী
লালবাজার সূত্রের খবর, বুধবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বাহিনীর ৬৭২ জন পুলিশকর্মী। মোট আক্রান্তের মধ্যে ৫১২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিদের বেশির ভাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে কিছু পুলিশকর্মীকে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার থেকে বুধবারের মধ্যে চারু মার্কেট থানার সাত জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এন্টালি থানা থেকে দু’জন আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে।
পুলিশকর্মীদের মতে, আনলক পর্ব থেকেই রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে তা আরও বেড়েছে। সেই সঙ্গে এখন অফিস, দোকান-বাজারও অনেকটাই স্বাভাবিক। লকডাউন পর্বে সাধারণ মানুষ যতটা সচেতন ছিলেন, এখন তার অভাব দেখা যাচ্ছে। ফলে সংক্রমণ বেশি মাত্রায় ছড়াচ্ছে। পুলিশ সামনে থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। সে কারণেই বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছে তারা, এমনই মনে করছে পুলিশমহল।
আরও পড়ুন: লকডাউনে রাস্তা বন্ধ, দেখা নেই বাসের
বিভিন্ন থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মী এবং অফিসারদের তাই ফের সুরক্ষা-বর্ম বিষয়ে লালবাজারের তরফে সতর্ক করা হয়েছে।
তবে একসঙ্গে এত পুলিশ আক্রান্ত হলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না বলেই লালবাজারের একাধিক কর্তা দাবি করেছেন। তাঁদের মতে, সব জায়গায় পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী রয়েছেন। তাই থানার কাজ কিংবা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে এর প্রভাব পড়বে না বলে দাবি তাঁদের।