প্রতীকী ছবি
রাস্তায় অসুস্থ এক বিদেশিনিকে দেখে আঁতকে উঠলেন চায়ের দোকানে বসে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা। করোনাভাইরাস নাকি!
বুধবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোডের এক অতিথিশালায় রাশিয়া থেকে আসা এক দম্পতিকে নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। অসুস্থ মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গী পুরুষ। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, মহিলা অসুস্থ। একে করোনা নিয়ে আতঙ্ক। তার উপরে বিদেশি নাগরিক। তাই স্থানীয়দের কেউই তাঁদের কাছে যেতে সাহস করেননি। ওই চত্বরেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। তখন সেখানে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া সিংহের স্বামী বাবলু সিংহ। তিনি বেরিয়ে এলেও ওই দু’জনের কাছাকাছি যাওয়ার সাহস দেখাননি। পরে বলেন, ‘‘অসুস্থ মহিলাকে ধরে ছিলেন পাশের ভদ্রলোক। দু’জনেই বিদেশি। এমনিতেই করোনা নিয়ে সতর্কতার আবেদন করা হচ্ছে সরকারের তরফে। তাই কাছে যাওয়ার ঝুঁকি নিইনি। সেখান থেকে ফোনে ভবানীপুর থানার বড়বাবুকে জানাই।’’ খবর পাঠান স্থানীয় নয় নম্বর বরোর স্বাস্থ্য আধিকারিককেও।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চিকিৎসকেরা মুখে মাস্ক লাগিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে পৌঁছন ঘটনাস্থলে। তত ক্ষণে ভবানীপুর থানার বড়বাবুর নেতৃত্বে পুলিশও চলে এসেছে। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ওই মহিলাকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, খুব অসুস্থ। তবে করোনার ভয়ে তাঁর কাছে যাওয়া নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন অনেকেই। ঠিক হয়, তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে এ ছাড়া তো কোনও উপায় নেই।
এ দিকে, তাঁদের নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখে বিরক্ত হন ওই দুই বিদেশি। ভবানীপুর থানার পুলিশ তাঁদের বিস্তারিত খোঁজ নিতেই হাতে থাকা কাগজ এগিয়ে দেন মহিলার সঙ্গে থাকা ভদ্রলোক। তাতে দেখা যায়, অসুস্থ মহিলার নাম ওলগা ডুলেসোভা। এসএসকেএমের পাশে মানসিক হাসপাতালে (ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি) যাবেন
চিকিৎসার জন্য। পুলিশের গাড়ি তাঁদের নিয়ে যায় সেখানে।
পরে পুলিশ জানায়, নদিয়ার মায়াপুর ঘুরে রাশিয়ার ওই দুই নাগরিক হরিশ মুখার্জি রোডের অতিথিশালায় উঠেছিলেন। এসএসকেএমে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, করোনাভাইরাস নয়, মহিলা মানসিক রোগে আক্রান্ত। এর পরে ওই দুই বিদেশি দমদমের অন্য একটি অতিথিশালায় চলে যান।