পোস্টার হাতে নীরব প্রতিবাদ বিদ্যাসাগর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি প্রায় ছ’বছর। কিন্তু অস্তিত্বহীন ছাত্র সংসদের নামে এখনও বিভিন্ন কলেজে শাসকদল তৃণমূলের ছাত্রনেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠেছে বিদ্যাসাগর কলেজেও।
গত পয়লা ডিসেম্বর ওই কলেজে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে আয়োজক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল কলেজের ছাত্র সংসদ এবং শিক্ষাকর্মীবৃন্দকে। অভিযোগ, ওই শিবিরে কলেজের পড়ুয়াদের একাংশকে কার্যত জোর করে রক্তদান করানো হয়। বিষয়টি নিয়ে ঘটনার পরে পোস্টার হাতে নীরব প্রতিবাদ জানান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। এ বার তাঁদের বিরুদ্ধেই মাইকে এবং কলেজে পোস্টার দিয়ে শুরু হয়েছে প্রচার।
শিক্ষামহলের একাংশের প্রশ্ন, প্রায় ছ’বছর যেখানে কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি, সেই ছাত্র সংসদের অস্তিত্ব এখনও কী করে থাকতে পারে? তারা রক্তদান শিবিরের আয়োজনই বা করে কী ভাবে? আর জোর করে রক্তদান করানো কতটা যুক্তিযুক্ত? সূত্রের খবর, অস্তিত্বহীন সেই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল মণ্ডল এখনও কলেজে সক্রিয়। পরিচালন সমিতির বৈঠকে তো বটেই, অ্যাকাডেমিক কমিটির বৈঠকেও তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি থাকে।
পড়ুয়াদের জোর করে রক্তদান করানো হয়েছিল কি না, তার উত্তরে মনিরুল বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। অস্তিত্বহীন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হয়ে তিনি কী ভাবে এখনও রয়েছেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর জবাব, ‘‘এ তো ব্যক্তি আক্রমণ! আর কোনও কথার উত্তর দেব না।’’ এর পরেই ফোন কেটে দেন তিনি। পুরো বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডুকে প্রশ্ন করলে তিনিও কোনও মন্তব্য করবেন না বলে ফোন কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়াদের কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক এবং টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক স্নেহাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘রক্তদান শিবির করার উদ্যোগ খুবই ভাল। কিন্তু জোর করে রক্তদান করানোর বিরুদ্ধে আমরা, শিক্ষকেরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। প্রতিবাদ সকলেই করতে পারেন। কিন্তু আমাদেরই বিরুদ্ধে যে ভাবে ক্লাস চলাকালীন মাইক বাজিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, সেটা বোধহয় কাম্য নয়।’’