ফাইল চিত্র।
ছবি: সংগৃহীত।
আয়ের উৎস সীমিত। তাই পুর এলাকাকে ১০০ শতাংশ পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত রাখতে যত খরচ করা প্রয়োজন, তা সব সময়ে সম্ভব হয়ে ওঠে না। মোল্লার ভেড়ি মামলায় সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালতে অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানাল বিধাননগর পুরসভা। তাদের দাবি, সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেই পরিবেশ আদালতের যাবতীয় নির্দেশ পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে আয়ের উৎস সীমিত, তাই সব সময়ে সব জায়গা দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব নয়― বিধাননগর পুরসভার এই বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পরিবেশবিদদের মতে, সমস্যা সীমিত আয়ের নয়। সমস্যা হল কোনটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, তার। এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘‘সৌন্দর্যায়নের জন্য এরা টাকা খরচ করতে পারে, কিন্তু পরিবেশের জন্য নয়।’’ অন্য এক পরিবেশবিদের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারই হোক বা পুরসভা, পরিবেশ বা দূষণ— এ সব নিয়ে যে কেউই চিন্তিত নয়, তা এই বক্তব্যে স্পষ্ট।’’ সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘দূষণমুক্ত পরিবেশ রাখার ব্যর্থতা ঢাকতে যে এ ভাবে সীমিত আয়কে অজুহাত হিসেবে দেখানো যেতে পারে, সেটাই খুব আশ্চর্যের!’’
প্রসঙ্গত, মোল্লার ভেড়ির বর্জ্য পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে পড়ে তার একাংশ বুজিয়ে দিচ্ছে বলে উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়। যা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এর পরেই বর্জ্য জলাভূমিতে যাতে না যায়, তাই মোল্লার ভেড়ি ঘিরে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এমনকি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ ঠিক ভাবে না করার জন্য আগে বিধাননগর পুরসভাকে দু’কোটি টাকা জরিমানাও করেছিল আদালত।
যদিও পুরসভার তরফে জমা দেওয়া সাম্প্রতিক ওই হলফনামায় জানানো হয়েছে, মোল্লার ভেড়ি ঘেরার কাজ চলছে। যে সমস্ত জায়গায় বেড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা সারাইয়ের জন্যও একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছে। তা ছাড়া মোল্লার ভেড়িতে দীর্ঘদিন জমে থাকা স্তূপীকৃত বর্জ্য (লেগ্যাসি ওয়েস্ট) সরানোর জন্য গত অগস্টে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। যে সংস্থা কলকাতা পুর এলাকার ধাপায় বায়োমাইনিং-এর কাজে যুক্ত, তাদের এখানেও বর্জ্য সরানোয় নিয়োগ করা হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভার তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, মোল্লার ভেড়িতে বায়োমাইনিং-এর কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসানো আগামী মাসেই শেষ হয়ে যাবে। আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে সেখানে সামগ্রিক বায়োমাইনিং-এর কাজ শেষ হবে।