এমন রাস্তায় নিত্য যাতায়াত। ছবি: অরুণ লোধ
উন্নয়নের কাজ চললে নানা সমস্যা হয়। কিন্তু বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটার মোড় পর্যন্ত সেই সমস্যা দুর্বিষহ আকার নিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের। তথ্য বলছে, এই রাস্তায় ছ’ মাসে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। কম-বেশি জখম হয়েছেন অনেকে। প্রবল যানজটও হয়। একটানা হুটার বাজিয়েও রেহাই মেলা না অ্যাম্বুল্যান্সের। এরই মধ্যে গোঁদের উপর বিষ ফোঁড়া, ফেটে গিয়েছে জলের লাইন। দক্ষিণ শহরতলির বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের এই পরিস্থিতিতে নাকাল হচ্ছেন পথচারীরাও।
কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) সূত্রের খবর, জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটার মোড় পর্যন্ত পিপিপি মডেলে প্রায় দশ কোটি টাকা খরচে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষে হতে ২০১৮ সালে।
স্থানীয় অভিযোগ, এই কাজের জন্যেই কঙ্কালসার হয়ে পড়েছে বজবজ ট্রাঙ্ক রোড। কার্যত প্রাণ হাতে গাড়ি চালাচ্ছেন চালকরা। ঝুঁকি নিয়ে চলছেন পথচারী। বাটার মোড় পেরোতেই শুরু হয়েছে এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। চওড়া রাস্তার দু’পাশে মেরে কেটে ন’ফুট জায়গা রয়ে গিয়েছে। সেখান দিয়েই যাচ্ছে ট্রাক, তেলের ট্যাঙ্কার, গাড়ি, অটো, মোটরবাইক, সাইকেল। পিচ উঠে রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে পাথরকুচি। সরু ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি যায় নৌকোর মতো দুলে দুলে। এর জেরে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
উড়ালপুলের স্তম্ভ বসাতে গিয়ে একাধিক বার কলকাতা মেট্রোপলিটন ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন অথরিটির (কেএমডব্লিউএসএ) জলের পাইপ ফেটে রাস্তা কাদায় ভরেছে। নর্দমার স্ল্যাব ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাস্তার ডাকঘর থেকে মোল্লারগেট অংশের খোঁড়া শেষ হলেও মেরামতি হয়নি।
পথচারীদের কথায়, দুর্ভোগ সত্ত্বেও সংস্কারের কথা ভেবে মেনে নিচ্ছিলেন তাঁরা। অথচ ক্রমেই পরিস্থিতি দুর্বিষহ হচ্ছে। তাঁদের দাবি, কাজ শেষ হতে এখনও দেরি। কিন্তু নিত্য ভোগান্তি বন্ধ হওয়া উচিত।
চিন্তিত স্থানীয় মহেশতলা পুরসভাও। পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘রাস্তার বিষয়ে কেএমডিএ-র সঙ্গে কথা চলছে।’’ কেএমডিএ সূত্রের খবর, রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে। সেখানে কী ভাবে রাস্তার মেরামতি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, স্থির হয়েছে প্রথমে উড়ালপুল নির্মাণকারী বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে তাঁরা রাস্তার হাল খতিয়ে দেখবেন। এর পরে, রাস্তার যে অংশের খোঁড়ার কাজ শেষ হবে সেই অংশের মেরামতি হবে। কেএমডব্লিউএসএ এবং কেএমডিএ দু’সংস্থারই দাবি, কাজ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই পাইপ ফাটবে। আপাতত এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ট্র্যাফিক পুলিশ ওই রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করে। তবে রাস্তার হাল না ফিরলে যানজট মুক্ত হওয়ার আশা কম।