পুরসভার পক্ষ থেকে হকারদের বসার জায়গা দাগ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্র্যান্ড হোটেলের ফুটপাতে। ছবি: সুমন বল্লভ।
হাই কোর্টের নির্দেশে গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে থেকে হকারদের সরাতে গিয়ে তৃণমূলের হকার সংগঠনের দুই গোষ্ঠী প্রকাশ্যেই বিবাদে জড়াল। সম্প্রতি হাই কোর্ট পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে, গ্র্যান্ড হোটেলের সামনের অংশে কেবল এক পাশে হকার থাকবে। ফুটপাতের তিন ভাগের এক ভাগ হকারদের জন্য রেখে বাকিটা পথচারীদের জন্য ছাড়তে হবে।
আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশাল পুলিশবাহিনী আসে। ছিলেন পুরসভার আধিকারিক ও টাউন ভেন্ডিং কমিটির সদস্যেরা। ফুটপাতের এক দিকে তিন ভাগের যে এক ভাগ অংশে হকারেরা বসতে পারবেন, সেই জায়গা পুলিশের তরফে হলুদ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। মেয়র পারিষদ (হকার পুনর্বাসন কমিটি) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে হকারদের রাখা হবে। ঠিক জায়গায় হকারদের বসতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। পুলিশ নজর রাখছে।’’
তবে তৃণমূল-সমর্থিত হকার সুরক্ষা সমিতির তরফে অশোককুমার মান্না অভিযোগ করেন, ‘‘গ্র্যান্ড হোটেলের নীচে থাকা হকারদের সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে সরানো হচ্ছে। ওঁদের থেকে টাকা নিয়ে বসানো হয়েছে। ওঁরা কোথায় যাবেন?’’ অশোকের পাশে থাকা বেশ কিছু হকার অভিযোগ তোলেন, হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান ঘোষ এর জন্য টাকা তুলেছেন। তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনে ফুটপাতের এক দিকে হকার থাকবে। তবে কোনও হকারকে সরানো হবে না।’’
এ দিন পুলিশের তরফে মাইকে ঘোষণা করে জানানো হয়, যে সমস্ত হকার নিয়ম ভেঙে ফুটপাতে বসেছেন, তাঁদের সরে যেতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই অংশে ১১৬ জন হকার রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৩ জন নিয়মভঙ্গ করে ব্যবসা করছেন। যদিও পুলিশ, পুরসভার আধিকারিকদের বক্তব্য মানতে নারাজ ওই ২৩ জন। প্রত্যেকেই জানান, পূর্বপুরুষদের হাত ধরে তাঁরা সেখানে এসে বসেছিলেন। কয়েক দশক ধরে সেখানে হকারি করে জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে তাঁদের।