দু’সপ্তাহ পরপর চারুচন্দ্র কলেজে গোলমালে রীতিমতো বিরক্ত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের পাশাপাশি শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। শিক্ষকদের ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে রবিবার পার্থবাবু বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের মতো আচরণ করছেন। কলেজের গেটে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। এ ভাবে কলেজ চলতে পারে না।’’ তবে শিক্ষকেরা জানান, মন্ত্রীর পরামর্শ মতো ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে। এ বিষয়ে আজ, সোমবার ১১টায় আলোচনা হবে।
গত সপ্তাহেই বহিরাগতদের উৎপাতের জেরে নিরাপত্তার দাবিতে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা মূল ফটকে অবস্থান-বিক্ষোভ করেছিলেন। এর পরে গত শনিবার ফের কলেজে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথম বর্ষের ক্লাস চলাকালীন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা বাইরে থেকে এসে ঢোকার দাবি জানান। বাধা দেওয়া হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদেরও সেই বিক্ষোভে যোগ দিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। রাত আটটা পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ চলে।
গত সপ্তাহে শিক্ষকদের অবস্থান তোলার জন্য কলেজে যেতে হয়েছিল খোদ মন্ত্রীকে। শনিবারও পড়ুয়াদের বিক্ষোভ তোলার জন্য এক প্রতিনিধিকে পাঠান শিক্ষামন্ত্রী। পুলিশ ও তাঁর হস্তক্ষেপে রাত আটটার পরে অবস্থান ওঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন মন্ত্রী বিরক্তি প্রকাশ করেন।
কেন কলেজে ঘন ঘন অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে?
এক শিক্ষক বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ৪ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল বিদায়ী ছাত্র সংসদ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রাজি না হওয়ায় গোলমাল শুরু হয়। গত ২১ জুলাই দুপুরে ঘণ্টাখানেক অধ্যক্ষ সত্রাজিৎ ঘোষের ঘরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান সংসদের সদস্যেরা। অধ্যক্ষ অভিযোগ করেছিলেন, অশ্রাব্য ভাষায় টিএমসিপি-র ওই সমর্থকেরা তাঁকে আক্রমণ করেছিলেন। তার পরে তিনি পদত্যাগের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। এর পরেই নিরাপত্তার দাবিতে অবস্থানে বসেন শিক্ষকেরা।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক বিমল শঙ্কর নন্দ বলেন, ‘‘মন্ত্রীর পরামর্শ অবশ্যই মানব। কিন্তু তার আগে সর্বসম্মত মতামত প্রয়োজন। তাই বৈঠক করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ যদিও শিক্ষকদের একাংশ বিরক্তি প্রকাশ করে জানান, বহিরাগতদের উৎপাত রুখতে কেউই সক্রিয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। নিরুপায় হয়েই তাই তাঁরা ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।