প্রতীকী ছবি।
মাইক, ডিজে নিয়ে পুরোদমে প্রচার চালিয়েছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কিন্তু তার পরেও দেখা গেল, শব্দবাজির সঙ্গে সমানে টক্কর দিচ্ছে মাইক, ডিজে নিয়ে অভিযোগ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং পরিবেশকর্মীদের কন্ট্রোল রুমে দায়ের হওয়া এই সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১৬টি!
পর্ষদ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত যত অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার মধ্যে ৮৫টি-ই হল মাইক ও ডিজে সংক্রান্ত। পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর কন্ট্রোল রুমেও এ দিন দশটা পর্যন্ত যত অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার মধ্যে ৩১টি হল ডিজে নিয়ে। ফলে শহরে শব্দবাজির মতোই ডিজে ও মাইককে কেন নিয়ন্ত্রণ করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। বিশেষ করে যেখানে চলতি বছরে মাইকও ডিজে যাঁরা ভাড়া দেন, তাঁদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছিল পর্ষদ।
পর্ষদ সূত্রের খবর, গত শনিবার মোট ২৫টি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তার মধ্যে ১০টি ছিল মাইক, ডিজে সংক্রান্ত এবং শব্দবাজি সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল ১৫টি। রবিবার, অর্থাৎ কালীপুজো এবং দীপাবলির দিনে মাইক, ডিজে সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা বেড়ে হয় ৪০। আর শব্দবাজি সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ১০০টি। সোমবার পর্ষদে দায়ের হওয়া মোট অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৯৫টি। যার মধ্যে ৩৫টি হল মাইক, ডিজে সংক্রান্ত এবং ৬০টি হল শব্দবাজি নিয়ে।
প্রচার সত্ত্বেও কেন মাইক, ডিজে-র দাপট রোখা গেল না?
পর্ষদের কর্তারা জানাচ্ছেন, মাইক্রোফোনে যে সাউন্ড লিমিটর লাগানোর কথা ছিল, তা বাজারে পর্যাপ্ত সংখ্যক ছিল না। ফলে অনেক জায়গায় ওই যন্ত্র লাগানো যায়নি। তা ছাড়া কারা, কী ভাবে মাইক ভাড়া দিচ্ছেন, তা নিয়ে সবে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে পর্ষদ। সে প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে তথ্যের ঘাটতি এটার অন্যতম কারণ। যদিও পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘এত দিন তো ধারণাই ছিল না যে মাইক, ডিজে ভাড়া দেওয়া সংস্থাদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এটা প্রথম বার হচ্ছে। সেটাই একটা অসুবিধা।’’
পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, যত ক্ষণ না মাইক্রোফোন বাজেয়াপ্ত করা হবে, তত ক্ষণ সুরাহা হবে না। ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত বলছেন, ‘‘অন্য বার কিন্তু ডিজে বা মাইক নিয়ে এত অভিযোগ আসে না। মানুষের একাংশের সচেতনতার ফল এটা।’’
যদিও পর্ষদ সূত্রের খবর, গত বছরের তুলনায় শহরের ‘অ্যাম্বিয়েন্ট নয়েজ়’ (পারিপার্শ্বিক আওয়াজ) এই কালীপুজোয় চার ডেসিবেল কমেছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘গত বছর অ্যাম্বিয়েন্ট নয়েজ়ের মাত্রা ছিল ৭০ ডেসিবেল। সেটা এ বছর সর্বোচ্চ ৬৫-৬৬ ডেসিবেলের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। এটা ভাল দিক বলে মনে করছি।’’