পুরস্কার ঘিরে প্রতিযোগিতা শুরু পুরসভার অন্দরে 

‘কলকাতাশ্রী’ ছিল আগেই। এ বার এসেছে ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’। আর এদের সৌজন্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্দরে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫৯
Share:

‘কলকাতাশ্রী’ ছিল আগেই। এ বার এসেছে ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’। আর এদের সৌজন্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্দরে।

Advertisement

তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে শহরের শ্রেষ্ঠ পুজো, প্রতিমা, মণ্ডপ নিয়ে প্রতিযোগিতা চালু করেছিল কলকাতা পুরসভা। নাম ‘কলকাতাশ্রী’। গত কয়েক বছর ধরে পুরসভার পার্ক ও উদ্যান দফতরের আয়োজনে সেই প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। এ বছর থেকে আবার মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে নতুন একটি প্রতিযোগিতা শুরু করেছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর, যার পোশাকি নাম ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’। প্রতিযোগিতার পর্ব শেষে দু’ক্ষেত্রেই এখন পুরস্কার দেওয়ার পালা। আর সেই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান ঘিরে দুই দফতরের মধ্যে লড়াই শুরু হয়েছে কি না, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। আয়োজক পুরসভা হলেও দু’টি আলাদা দিনে কেন অনুষ্ঠান হচ্ছে, তা নিয়েই জল্পনা চলছে পুর অন্দরে। কার অনুষ্ঠান কতটা জমজমাট করা যায়, তা নিয়ে এখন তৎপরতা তুঙ্গে পুরসভার দু’টি দফতরে। দর্শক টানতে নামী শিল্পীকে দিয়ে অনুষ্ঠান করানোর পরিকল্পনাও রয়েছে দু’তরফেই। যা দেখে দু’পক্ষের প্রতিযোগিতা নিয়ে জল্পনার বিষয়টি আরও মাত্রা পাচ্ছে।

‘কলকাতাশ্রী’ প্রতিযোগিতায় শহরের সেরা মণ্ডপ, সেরা পুজো কমিটি, প্রতিমা-য় শ্রেষ্ঠ বা সেরা থিমের উপরে পুরস্কার দিয়ে থাকে পুরসভা। এ বছরে বিভিন্ন পেশার বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তের উপরে ভিত্তি করে আগামী ১৫ নভেম্বর মোহরকুঞ্জে শহরের ৩৬টি পুজো কমিটিকে ওই পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কার মূল্য ৫০ হাজার টাকা। অন্য দিকে, ডেঙ্গি সচেতনতায় মশা নিধনের কাজ যে পুজো কমিটি যত ভালো করে দেখিয়েছে, তার উপরে ভিত্তি করে ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’ প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত করা হবে তাদের। এ ক্ষেত্রে পুরস্কার মূল্য ৩০ হাজার টাকা। প্রথম বছরে শহরের ২৬টি পুজো কমিটি ওই পুরস্কার পাচ্ছে, যার মধ্যে একটি হল মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমারের পুজো। এই অনুষ্ঠানটি হবে আগামী ২২ নভেম্বর, রবীন্দ্র সদনে।

Advertisement

পুরমহলের খবর, মন্ত্রী, বিধায়ক-সহ শহরের বিশিষ্টজনেদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দু’টি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানেই। কিন্তু পুর প্রশাসনের খরচে আলাদা ভাবে দু’টি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের এই পৃথক আয়োজনেই প্রতিযোগিতার তত্ত্ব আরও জোরদার হচ্ছে।

পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, মেয়রের নির্দেশে ‘কলকাতাশ্রী’ প্রতিযোগিতার তদারকি করেন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিসবাবু। আর ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’ প্রতিযোগিতার অন্যতম উদ্যোক্তা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। এক জন দক্ষিণের, অন্য জন উত্তর কলকাতার বাসিন্দা। তাই অনেকেই মনে করছেন, উত্তর বনাম দক্ষিণ কলকাতার অঘোষিত লড়াইয়ের আঁচ পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠান ঘিরেও থাকতে পারে। যদিও এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দেবাশিসবাবু এবং অতীনবাবু দু’জনেই কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে ‘কলকাতাশ্রী’ এবং ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’ দু’টি পুরস্কারের ধরন ভিন্ন বলে দাবি করছেন উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক। আর স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘কলকাতাশ্রী প্রতিযোগিতায় পুজোর নান্দনিক দিকটি বিচার্য বিষয়। আর স্বাস্থ্যবান্ধব সামাজিক কর্তব্যের নিরিখে। শহরবাসীকে ডেঙ্গিবাহী মশা নিয়ে সজাগ করতে পুজো কমিটিরও অবদান রয়েছে। স্বাস্থ্যবান্ধব পুরস্কারটি সেই উদ্দেশেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement