কলকাতা পুরসভার কমিউনিটি হল এ বার বুক করা যাবে অনলাইনে। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর প্রশাসন। আগামী অগস্ট থেকে এই পদ্ধতি চালু হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
এত দিন পুরসভার অধীনে থাকা কমিউনিটি হল ভাড়া দেওয়ার ক্ষমতা ছিল ডেপুটি মেয়রের হাতে। তাঁর দফতরই সেই কাজ করত। এ বার পুরনো পদ্ধতির বদল ঘটিয়ে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বলে জানান পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিক। শুক্রবার এ বিষয়ে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের ঘরে এক বৈঠক হয়। হাজির ছিলেন পুরসভার পদস্থ আমলা এবং অফিসারেরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের অধীনস্থ কমিউনিটি হলের সংখ্যা ৬২। বিয়ে, নিকাহ, উপনয়ন, অন্নপ্রাশন, শ্রাদ্ধ থেকে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি হলগুলি ভাড়া নেওয়া যায়। বেসরকারি হলের থেকে ভাড়া কম বলে তার চাহিদাও যথেষ্ট। গত চার-পাঁচ বছরে কমিউনিটি হলের সংখ্যা শুধু বাড়েইনি, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঝাঁ-চকচকে হলগুলি টেক্কা দিতে পারে শহরের অনেক বেসরকারি অনুষ্ঠান বাড়িকেও।
বাড়তি পাওনা ছিল ভাড়ার উপরে বিশেষ কমিশন। ওয়ার্ড বা এলাকার গরিব কোনও পরিবার আবেদন করলেই কমপক্ষে ২৫ শতাংশ থেকে সর্বাধিক ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত
ছাড়ও পেয়েছেন কেউ কেউ। তবে ওই ছাড়ের ভার ছিল মেয়র এবং ডেপুটি মেয়রের উপরে। তৃণমূলের পুরবোর্ডে ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদই এ সব দেখতেন। সম্প্রতি মেয়রের নির্দেশে পুর প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, ইকবাল আহমেদ অসুস্থ থাকায় তাঁর সেই দায়িত্ব এ বার থেকে সামলাবেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। এ নিয়ে পুর মহলে গুঞ্জন ওঠে, সিবিআইয়ের ডাক পাওয়ার পরে ইকবালের দায়িত্ব অন্য মেয়র পারিষদকে দেওয়ার পিছনে বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ পুরকর্তারা।
কিন্তু অনলাইনে আবেদন হলে কি ছাড় থাকবে?
পুরসভার এক অফিসার জানান, যাঁরা বিশেষ ছাড় নিতে চান, তাঁদের ছাড়ের জন্য আগে আবেদন করতে হবে। তা মঞ্জুর হলে তবেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
বর্তমানে কত ভাড়া পুরসভা পরিচালিত কমিউনিটি হলগুলির? পুরসভা সূত্রের খবর, কলোনি এলাকায় যে সমস্ত হল রয়েছে, তার ভাড়া সাড়ে তিন হাজার টাকা। তবে শহরে এমন কয়েকটি হল রয়েছে যেগুলি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। যেমন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডে ‘আগমনী’, কালীঘাটে ‘জয়হিন্দ’, দেবাশিস কুমারের ওয়ার্ডে ‘ত্রিধারা’ এবং উত্তর কলকাতায় ‘সোনার তরী’। এই সমস্ত কমিউনিটি হলের ফ্লোর হিসেবে ভাড়া। প্রতিটিই এসি হল। যার ভাড়া ১০ হাজার টাকা।
কমিউনিটি হলের ভাড়া কি বাড়ানো হচ্ছে?
এখনই তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানান দেবাশিসবাবু। তবে পুরসভা সূত্রের খবর, এত দিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হত। এ বার থেকে কেউ
যদি রাত ১১টার পরেও অনুষ্ঠান চালিয়ে যান, তা হলে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে। এ ছাড়া, এত কাল বিদ্যুতের বিল ধরেই ভাড়া বলা হতো। এ বার আলাদা করে বিদ্যুতের
বিল নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে ভাবছে পুর প্রশাসন।