ছটপুজো উপলক্ষে দু’দিনের ছুটি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।
গিয়েছিলেন ছটপুজোর অনুষ্ঠানে। তবে শুধুমাত্র শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েই দায় সারেননি। বরং অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হেস্টিংসের কাছে দইঘাটে ছটপুজো উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। মঙ্গলবার সেখানে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং সাংসদ সুব্রত বক্সী। সেখান থেকেই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন মমতা। বলেন, ‘‘ভিন্ন ধর্মের ভিন্ন অনুষ্ঠান। তবে তাতে সামিল হওয়ার অধিকার সকলের। ভারতীয় সংস্কৃতি অন্তত তাই বলে। বাংলা সেই পথেই চলছে। ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন ভাষার মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকায় বিশ্বাসী। বাকি রাজ্যগুলোর মতো নয়যে অন্য ভাষার মানুষদের বের করে দেব।’’
মঞ্চে হাজির অতিথিদের কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘মঞ্চের উপর তাকিয়ে দেখুন। সুব্রত বক্সী, ফিরহাদ হাকিম, আনোয়ার, রামপিয়ারি সকলেই রয়েছে। এটাই তো আসল হিন্দুস্তান! যেখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকেন। ফিরহাদকে দেখুন, মা মুখোপাধ্যায়, বাবা হাকিম। কোনও সমস্যা হয়েছে কি? আপনারাও নিশ্চিন্তে থাকুন। আমরা সকলকে নিয়ে থাকায় বিশ্বাসী।ধর্ম এবং ভাষার নিরিখে মানুষকে হেনস্থা করার অভ্যাস নেই।’’
ছটপুজোর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: শবরীমালা মামলায় নয়া মোড়, নিজের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনায় রাজি শীর্ষ আদালত
আরও পড়ুন: সেরার দৌড়ে পশ্চিমবঙ্গ, ছুটিতে ধারেকাছে নেই প্রায় কেউই!
ছটপুজোয় দু’দিনের ছুটি দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মতামত উঠে এসেছে। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা শুধু মাত্র দুর্গাপুজো পালন করি না। রমজান পালন করি। ধূমধাম করে পালিত হয় নানকের জন্মদিন। আবার ছটপুজোও করি। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার নির্বাচনে জিতি। তার পর থেকে প্রতি বছরই ছটপুজোয় সামিল হই। গতবছর ছুটি দিয়েছিলাম। দু’দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে এ বারেও। যাতে সোমবার না পারলে মঙ্গলবারও পুজো সারতে পারেন মানুষ। অন্য কোনও রাজ্য কিন্তু দুর্গাপুজোয় ছুটি দেয় না।মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য ঘাটগুলিকে পরিষ্কার রাখা হয়েছে। করা হয়েছে আলোর বন্দোবস্ত। নির্বিঘ্নে পুজো সম্পন্ন হয় যাতে তার খেয়াল রাখছে পুলিশ। স্থানীয় ক্লাবগুলোও সহযোগিতা করছে। নিশ্চিন্তে পুজো সারুন আপনারা। বাড়ি ফিরে ঠেকুয়া, লিট্টি বানিয়ে খান। সকলকে নিয়ে আনন্দ করুন।’’
রাজ্যে সম্প্রীতি ও সুশাসন কায়েম রাখা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান ফিরহাদ হাকিমও। সরাসরি গুজরাত ও অসমের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। বলেন, ‘‘ভাষা, ধর্ম যা-ই হোক না কেন, বাংলায় সব মানুষ নিরাপদ। অন্য কোনও রাজ্য এতটা সুরক্ষিত নয়। গুজরাত এবং অসমে তো অন্য ভাষার মানুষদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হচ্ছে।’’