State news

সিন্ডিকেট ব্যবসায় বিরোধের জেরে বেহালায় গুলি, সংঘর্ষ

বেহালা থানা এলাকার ওই ঘটনায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ১৫:১৪
Share:

সংঘর্ষে আহতরা।

সিন্ডিকেট নিয়ে বিরোধের জেরে শাসক দলেরই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। রবিবার গভীর রাতে কলকাতা পুরসভার ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফুল্ল সেন কলোনিতে এক সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী এবং তাঁর দলবল বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায় বলে অভিযোগ। বেহালা থানা এলাকার ওই ঘটনায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে অনিরুদ্ধ মণ্ডল ওরফে ভুট্টো এবং রাজু প্রামানিকের নাম এফআইএর-এ ছিল।

Advertisement

ওই কলোনির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকায় ইমারতি মালমশলা সরবরাহের সিন্ডিকেট চালান বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। এলাকায় যুব তৃণমূল নেতা হিসাবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই এলাকায় বাবুনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত বুনো। তিনিও তৃণমূল কংগ্রেস করেন। এলাকায় সিন্ডিকেট নিয়ে বাবুন বনাম বুনোর বিরোধ দীর্ঘ দিনের।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রবিবার গভীর রাতে বাবুন নিজের বেশ কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে চড়াও হন বুনো এবং তার ঘনিষ্ঠদের উপর। প্রত্যেকেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ। প্রফুল্ল সেন কলোনির বাসিন্দাদের অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় তাঁরা বুনো এবং তার ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে চড়াও হন। ভাঙচুরের চেষ্টা চালানো হয়। দু’পক্ষের মধ্যে অট ছোড়াছুড়ির পাশাপাশি লাঠি এবং বাঁস দিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ৭ জন আহত হন।

Advertisement

আরও পড়ুন: কত আসন পাবে বিজেপি, পশ্চিমবঙ্গেই বা ক’টা? কী বলছে সমীক্ষা...

স্থানীয়দের দাবি, গত বেশ কয়েকদিন ধরেই একই ঘটনা চলছে। বাবুন এবং তার দলবল এলাকায় ঢুকে গন্ডগোল করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “গতকাল রাতে আমরা প্রতিবাদ করি। পাড়ার অনেকে বেরিয়ে ওদের চলে যেতে বলি। তাতে বচসা শুরু হয়ে যায়। বচসার মাঝেই বাবুন এবং তার লোকজন গুলি চালায়!”

ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি নীলাঞ্জন বিশ্বাস

অনুপম ভট্টাচার্য নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “ আমি ছেলের জন্য খাবার আনতে বেরিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফেরার পথে দেখি, প্রায় আট-দশটা বাইক নিয়ে বাবুন আর দলবল হাজির। সবাই মিলে বুনো, বিশু-র নাম করে গালিগালাজ করছে। আমি ওখানে যেতেই কোনও কথা না বলে আমাকেও গালিগালাজ করতে শুরু করে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে সবাই মিলে মারতে থাকে। রাস্তায় ফেলে আমাকে লাথি মারতে থাকে।” ওই পাড়ারই বাসিন্দা রমা ঘোষ অভিযোগ করেন, “ ওই এলাকায় রীতিমত ত্রাস তৈরি করেছে বাবুন এবং তার দলবল। সিন্ডিকেটের নামে তোলাবাজি করছে।” তোলাবাজির প্রতিবাদ করাতেই হামলা বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামীকে ফোনে না পেয়ে টুইট সুষমার

পুলিশ সূত্রে খবর, দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। এ দিন ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের ডিসি নীলাঞ্জন বিশ্বাস। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে। এ বিষয়ে এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, “প্রফুল্ল সেন কলোনিতে একটা গন্ডগোল হয়েছে। গুলি চলার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি আদৌ গুলি চলেছে কি না?”

তবে, পুলিশ সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, মত্ত অবস্থায় দু’টি গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল করেছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে তৃণমূলের একাংশ যাঁরা বাবুনের সমর্থক, তাঁদের অভিযোগ, বুনো এবং তাঁর সঙ্গীরা সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন। বিজেপির মদতেই তাঁরা পাড়ায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছেন। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান মানিকলাল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement