উপচে পড়া দোকানপাট। পছন্দের জিনিস বাছাই করার জন্য হুড়োহুড়ি। পুজোর বাজারের মতোই ভিড়।
তফাৎ একটাই। এই কেনাকাটা ক্রেতাদের ‘শপিং ক্যালেন্ডার’ বহির্ভূত। বিপুল ছাড় ও দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা— দুই মিলে ক্রেতাদের দোকানের চৌকাঠ পার করে দিয়েছে। মাসের শেষে বেতন পাওয়ার তোয়াক্কা না করেই কেনাকাটার হুজুগে মেতেছে শহর।
জিএসটি বা পণ্য পরিষেবা কর চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে চির পরিচিত ভিড়ে ঠাসা গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট, হাতিবাগানের ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে শহরের বিভিন্ন শপিং মল। কোথাও ২০ থেকে ৫০ শতাংশ, কোথাও বা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। জিএসটি চালু হওয়ার আগে জমানো জিনিস দোকান থেকে বিক্রি করতে কোনও অঙ্কের ছাড়েই পিছপা নয় জামা, জুতো, ব্যাগ, চশমা থেকে ফোন, ফ্রিজ, টিভি বিক্রেতারা।
চাঁদনি চক মেট্রোর দু’পা দূরে মূলত বৈদ্যুতিন পণ্যের জন্য তৈরি ই-মল। গোটা বছর এখানে ক্রেতাদের তেমন ভিড় থাকে না। কিন্তু শুক্রবার ছবিটা বদলে গিয়েছে। মোবাইলের দোকানে ক্রেতাদের লাইন পড়ে গিয়েছে। ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের হাতছানিতে ক্রেতাদের ভিড় জমেছে। হিমশিম খাচ্ছেন দোকানের কর্মীরা। ক্রেতাদের মোবাইল দেখাতে দেখাতেই সুবীর দাস বললেন, ‘‘এত ভিড় পুজো বা দীপাবলিতেও হয় না।’’ ভিড়ের তোয়াক্কা করছেন না ক্রেতারা। শহরতলির বাসিন্দা কুশল ঘোষ বলেন, ‘‘এত কম দামে সব ব্র্যান্ডের মোবাইল পাওয়া যাচ্ছে। সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। পুজোর উপহার কিনে নিলাম।’’
অ্যাক্রোপলিস, সাউথ সিটি, কোয়েস্ট, লেক মল— উপচে পড়া ভিড়ের ছবি সর্বত্র। নামী-দামি ব্র্যান্ডের জামাকাপড়, জুতো, ব্যাগ, সানগ্লাস কিনতে ঝাঁপাচ্ছেন সকলেই। অফিস ছুটি নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন মোহর সেন। সোজাসাপটা জবাব তাঁর, ‘‘পুজোর কেনাকাটা করার এটাই সুবর্ণ সুযোগ। খরচ বাঁচাতে তাই অফিস থেকে ছুটি নিতে দ্বিধা করিনি।’’ একই যুক্তিতে নতুন ফ্ল্যাট সাজাতে এক সঙ্গে টিভি, ফ্রিজ কিনে ফেললেন সোনারপুরের বসু দম্পতি।