Right To Equality

বৈষম্য ঘুচিয়ে সমান অধিকারের দাবিতে পথে যৌনকর্মীদের সন্তানেরা

যৌনকর্মীদের সন্তানদের নিয়ে তৈরি ‘আমরা পদাতিক’ই এ বার নিজেদের অধিকার, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের দাবি তুলছে। কারণ, সামাজিক দিক থেকে প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হতে হয় তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:২০
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কারও মাথার টুপিতে লেখা ‘সবার জন্য স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচার’। কারও হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘আমরা পদাতিক দিচ্ছে ডাক, মায়েরা শ্রমিকের অধিকার পাক’। শনিবার, বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে নানা দাবি নিয়ে উত্তর কলকাতার পথে হাঁটলেন যৌনকর্মীদের সন্তানেরা। নিজেদের জন্য সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার পাশাপাশি, তাঁদের যৌনকর্মী মায়েদের শ্রমিকের অধিকার দেওয়ার দাবিতেও সরব হলেন মিছিলে আসা প্রায় ৩০০ জন ছেলেমেয়ে।

Advertisement

সোনাগাছিতে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’র অংশ হিসাবে ২০০৬ সালে শুরু হয়েছিল ‘আমরা পদাতিক’-এর পথ চলা। যৌনকর্মীদের সন্তানদের নিয়ে তৈরি ‘আমরা পদাতিক’ই এ বার নিজেদের অধিকার, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের দাবি তুলছে। কারণ, সামাজিক দিক থেকে প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হতে হয় তাঁদের। স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলোয় যোগদান— সব ক্ষেত্রেই ওই শতাব্দী, রতন, পূজাদের ‘আলাদা চোখে’ দেখা হয় আজও। প্রতিভা থাকলেও সুযোগের দরজা বন্ধ হয়ে যায় তাঁদের সামনে। এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতেই এ দিন পথে নামলেন তাঁরা। অধিকারের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েক জন যৌনকর্মীর সন্তানদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয় আইনি সাহায্য প্রদানকারী একটি সংস্থার তরফে। দুর্বারের মেন্টর ভারতী দে বলছেন, ‘‘যৌনকর্মীদের ছেলেমেয়েদের সামনে সুযোগের দরজা খুলে দিতে চেষ্টা করছে আমরা পদাতিক। কম বয়সে বিয়ে দেওয়া ও পণ প্রথা বন্ধ করা, লেখাপড়ার সুযোগ করে দেওয়া, বয়ঃসন্ধির সময়ে তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও দোলাচলকে কাটিয়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি করার কাজটা করে দিচ্ছে এই সংগঠন।’’

এ দিন প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিলে হাঁটা, আমরা পদাতিকের সভাপতি তথা যৌনকর্মীর সন্তান রতন দলুই বলছেন, ‘‘আমার মা দুই ছেলেকে বড় করতেই বীরভূম থেকে এসে এই পেশায় যুক্ত হন। সেখানে দি ইমমরাল ট্র্যাফিক (প্রিভেনশন) অ্যাক্টের (আইটিপিএ) চার নম্বর ধারায় বলা হচ্ছে, ১৮ বছর বয়সের পরে মায়েদের সঙ্গে থাকতে পারবে না সন্তানেরা। মায়ের রোজগারের টাকায় পড়াশোনাও করতে পারবে না তারা। অথচ, ওটা তো উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার বয়স। তা হলে আমরা উচ্চশিক্ষার জন্য এগোব কী ভাবে?’’ এই মিছিল থেকেই তাই এই ধারা বাতিলের দাবি উঠেছে। রতন আরও বলছেন, ‘‘অনেকেই যৌনকর্মীদের পাচারের শিকার বলে দেগে দিতে চাইছেন। সে ক্ষেত্রে মায়েদের শ্রমের অধিকারের কী হবে? সন্তানদেরই বা কী বলা হবে? সরকারি বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ কমিটি আমাদের বিষয়ে আইন বানানোর আগে আমাদের মতামতটাও শুনুক, এটাও চাই আমরা।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement