পুজোর আগেই খুলতে পারে টালা সেতু।
কলকাতাবাসীকে শারদোৎসবের উপহার দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সব ঠিকঠাক চললে পুজো শুরুর কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে নবনির্মিত টালা সেতুর। গত সপ্তাহে মলয় ঘটকের হাত থেকে পূর্ত দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন মন্ত্রী পুলক রায়। দফতরের দায়িত্ব নিয়েই তিনি জানিয়েছিলেন, পুজোর আগেই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করে জনসাধারণের জন্য তা খুলে দিতে চায় রাজ্য সরকার। তাঁর এমন মন্তব্যের পরেই তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছিল পূর্ত দফতরে। সূত্রের খবর, মহালয়ার একদিন আগে নতুন সেতু উদ্বোধনের দিনক্ষণ স্থির করেছে পূর্ত দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই ২৪ সেপ্টেম্বর নতুন টালা সেতুর উদ্বোধন করা হবে। ৮০০ মিটার লম্বা এই সেতুটি তৈরি করতে খরচ পড়েছে ৪৬৮ কোটি টাকা। দেবীপক্ষের একদিন আগে এই সেতুটি খোলার যাবতীয় প্রস্তুতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই শেষ করে ফেলতে চায় পূর্ত দফতর। কারণ, ২৫ তারিখে মহালয়া, তখন থেকেই কলকাতায় পুজো শুরু হয়ে যায়, তাই ওই সময় টালা সেতু খুলে গেলে উত্তরের যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু ভেঙে যাওয়ার পর রাজ্যের সব সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করার কাজে হাত দেয় রাজ্য সরকার। সেই সময় টালা সেতুরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা পূর্ত দফতরকে জানায়, সেতুটি অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে। সেতুর গায়ে একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ভেঙে নতুন সেতু তৈরি করার প্রস্তাব দেন তাঁরা। ২০১৯ সালের পুজোর আগে পুরনো টালা সেতুতে যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়। ২০২০ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে টালা ব্রিজে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভাঙার কাজও শুরু হয়। ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের পরিস্থিতিতে লকডাউন পর্বেও টালা ব্রিজ ভাঙার কাজ চলতে থাকে। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে নবনির্মিত মাঝেরহাট সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে প্রহর গণনা শুরু হয় টালা সেতুর উদ্বোধনের। অবশেষে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে টালা সেতুর। নতুন টালা সেতু হবে চার লেনের। মাঝেরহাট ব্রিজের মতো এটিও 'কেবল স্টেড রেলওভার' ধাঁচের সেতু হবে।