দীর্ঘক্ষণ জরুরি বিভাগে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীকে নিয়ে পথে বিক্ষোভ দেখাতে যাচ্ছেন রোগীর আত্মীয়রা।—নিজস্ব চিত্র।
রোগীর পরিবার এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে বচসা-মারামারির জেরে দীর্ঘক্ষণ ধরে অচল রইল চলল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর আত্মীয়রা দুর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে সেই রোগীকে ভর্তি করানো হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত সকালে। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে এনআরএসে রেফার করা হয় তপসিয়ার বাসিন্দা পারভেজ হোসেনকে। বুকে ব্যাথার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সাঁইত্রিশ বছরের পারভেজকে।
সেখান থেকে এনআরএসে নিয়ে গেলে প্রথমে তাঁকে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরিবারের লোকজনকে পারভেজের সিটি স্ক্যান করাতে বলেন। অভিযোগ, সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে গেলে, প্রথমে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পারভেজের পরিবারের অভিযোগ, ইতিমধ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা ইঞ্জেকশন দেন। তারপরই তিনি মারা যান। রোগীর পরিবারের লোকজন ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তোলেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে গণ্ডগোল বেধে যায় তাঁদের।
আরও পড়ুন: নেশার রাত বিকোচ্ছে আইন ভেঙে, বেকবাগানের বহুতলে আবগারি হানা
আরও পড়ুন: মডেল হওয়ায় ‘বাধা’ পরিচয়! চাওয়ালা বাবাকে ছেড়ে গেল মেয়ে
মেডিসিন বিভাগের চার তলায় জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রীতিমত মারপিট শুরু হয়ে যায়। রোগীর পরিবারের দাবি, জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের ব্যপক মারধর করেন।পারভেজের দাদা মুস্তাক হোসেনের অভিযোগ,“ডাক্তাররা আমাদের আটকে রেখে মারধর করেছেন। পুলিশ উল্টে চিকিৎসকদের সাহায্য করেছে।” এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, “রোগীর আত্মীয়রা ওয়ার্ডের মধ্যে ঢুকে আমাদের মারধর করছিলেন।ভাঙচুরের চেষ্টা করছিলেন। আমরা পুলিশকে ফোন করি। শুরুর দিকে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল।”
এনআরএস হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রোগীদের পরিবারের ভিড়।—নিজস্ব চিত্র।
এই অশান্তির মধ্যেই পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযোগ, তার মধ্যেই পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি বিভাগের সব ক’টি দরজা বন্ধ করে দেন। তার ফলে রোগীরা এসে ফিরে যেতে থাকেন চিকিৎসা না পেয়ে। এ রকমই একজন দুর্ঘটনায় আহত রোগীকে নিয়ে এসে চিকিৎসা না পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর আত্মীয়রা। তাঁরা আহতকে নিয়ে রাস্তায় চলে যান। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে সেই রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়। তবে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা অচলাবস্থায় হয়রানির শিকার হন বেশ কিছু রোগী, বিশেষ করে জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের চূড়ান্ত ভোগান্তি হয় বলে অভিযোগ।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)