Jadavpur University Student Death Case

যাদবপুরকাণ্ডে জরুরি বৈঠক ডাকলেন আচার্য বোস, বুধবার বিকেলে রাজভবনে তলব কর্তৃপক্ষকে

ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিং বিরোধী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আগেই তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৩ ২২:১৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যু ঘটনায় এবার জরুরি বৈঠক ডাকলেন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বুধবার বিকেল ৫টায় রাজভবনে এই বৈঠক ডেকেছেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে আসতে বলা হয়েছে।

Advertisement

রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নোটিসের পর আচার্যের ডাকে এই বৈঠকের প্রস্তুতি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মুহূর্তে কোনও উপাচার্য বা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নেই। এই অবস্থায় ছাত্রমৃত্যুর ‘দায়’ আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল বোসের উপরই দিচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। বস্তুত, গত মার্চ মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সুরঞ্জন দাসের ইস্তফার পর অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল তথা আচার্য বোস। কিন্তু গত ৪ অগস্ট অমিতাভও ইস্তফা দেন। এর পর আর নতুন করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে কাউকে নিয়োগ করেননি রাজ্যপাল। অন্য দিকে, গত বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিং বিরোধী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যপাল। শুক্রবার তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে রাজ্যপাল জানান, শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি ‘র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি’ তৈরি করা হবে। ওই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। ওই কমিটি সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাগিং সম্পর্কিত অভিযোগ শুনবে। র‌্যাগিং আটকাতে ওই কমিটি নীতি নির্ধারণ করবে। যেহেতু এই মুহূর্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই, তাই আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল নিজে যাদবপুরকাণ্ডে এই পদক্ষেপ করেছেন। বুধবারের বৈঠকে ওই সংক্রান্ত কোনও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে নগ্ন ও অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’তে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে মৃতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে এক জন প্রাক্তনী এবং বাকি দু’জন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। নদিয়ার বগুলার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যাদবপুর (বিশ্ববিদ্যালয়) এখন আতঙ্কপুর।

Advertisement

অন্য দিকে, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে নোটিস পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। স্বতঃপ্রণোদিত এই নোটিসে কমিশন জানায়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, ঘটনার আগে ডিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মৃত ছাত্রের সহ-আবাসিকেরা। কিন্তু তাঁদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষণ, সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যে উঠে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাজ এবং দায়িত্বে অবহেলার কথা। যেখানে এক জন তরুণ ছাত্রের র‌্যাগিংয়ের আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে। নোটিসে লেখা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের এই সমস্ত খবর যদি সত্যি হয়, তাতে পরিষ্কার যে ছাত্রের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। যাদবপুরকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে র‌্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি অমান্য করার কারণ দর্শাতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনও। বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ করা হয়েছে। সোমবার বিবৃতি জারি করে কমিশন। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট র‌্যাগিং সংক্রান্ত যে নির্দেশ দেয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অমান্য করা হয়েছে। র‌্যাগিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশিকাও মানা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement