এমন বাড়ি নিয়েই উঠছে প্রস্তাব। ছবি: রণজিৎ নন্দী
এমনিতেই কাঠামো দুর্বল। তার উপরে বৃষ্টিতে তা আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে যখন-তখন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে অনেক বিপজ্জনক বাড়ির। তাই আগামী সপ্তাহে কেন্দ্রীয় পুর ভবন খুললেই সেই সব বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব জমা পড়তে চলেছে দু’নম্বর বরো অফিসের তরফে। বরো অফিস সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে।
দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সাধন সাহা বলেন, ‘‘আমার বরোর অধীন এলাকায় অনেকগুলি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। এ বৃষ্টির মরসুমে সেগুলির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। ফলে মঙ্গলবার অফিস খুললেই সেগুলি ভাঙার প্রস্তাব রাখব।’’ দু’নম্বর বরোর অধীনস্থ গোরাচাঁদ বসু রোড, সাহিত্য পরিষদ-সহ একাধিক জায়গায় অনেকগুলি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। তবে বাড়িগুলির যে সমস্ত অংশ বিপজ্জনক, তা ভেঙে ফেলার সুপারিশ করা হবে বলে সাধনবাবু জানাচ্ছেন।
এমনিতেই বর্ষাকালে বিপজ্জনক বাড়ির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। কারণ, বৃষ্টির জল শুষে ইট-পলেস্তরা দিয়ে তৈরি কাঠামো ফুলে ওঠে। ফলে সেগুলি খসে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। টানা বৃষ্টি হলে তাই শহরের বহু জায়গায় এ ভাবে বাড়ি ভেঙেও পড়ে। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘সারা শহরেই বৃষ্টির মরসুমে বাড়তি চিন্তা থাকে। বেশির ভাগ বাড়ি ভাঙার ঘটনা এ সময়টাতেই ঘটে।’’ সে কারণে বরোভিত্তিক বিপজ্জনক বাড়ির তালিকাও রাখে পুরসভা।
যদিও পুর আধিকারিকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, বিপজ্জনক জেনেও বাড়িগুলিতে লোকজন বসবাস করায় অনেক সময়ই তা ভাঙার কাজ সুষ্ঠু ভাবে করা যায় না। কারণ, নোটিস দেওয়ার পরেও অনেকেই সেখান থেকে সরতে চান না। ফলে ভাঙতে গিয়ে অনেক জায়গায় পুরকর্মীদেরই প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয়। অথচ বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কার করা হবে ইতিমধ্যেই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে ওই বাড়ির বাসিন্দাদের থাকার জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থাও করে দেবে পুরসভা।
পুরকর্মীদের কাজে বাধাদানের একটি বড় কারণ মালিক-ভাড়াটের গোলমাল। যার ফলে সেই বিপজ্জনক বাড়িগুলির পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়। যদিও বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কারের পরে বৈধ ভাড়াটেদের জায়গা দিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে পুর প্রশাসন। বাড়ির মালিকেরা সংস্কারের পরে
যদি ভাড়াটেদের জায়গা দিতে না চান, তা কখনওই মানা হবে না বলে মত পুর কর্তৃপক্ষের।
এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাড়ি ভেঙে যখন সংস্কার করা হবে, তখন সেই নতুন নকশায় বৈধ ভাড়াটেদের নাম, তাঁদের সাক্ষর রাখা থাকবে। যাতে সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে গেলে তাঁরা সেখানে তাঁদের জায়গা পান। তবে পুর কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাস দেওয়ার পরেও অনেক জায়গাতেই মালিক-ভাড়াটের সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। ফলে আটকে যাচ্ছে পুরনো বাড়ির বিপজ্জনক অংশ
ভাঙার প্রক্রিয়া।’’