—প্রতীকী চিত্র।
সময়ের সঙ্গেই পাল্লা দিয়েই চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ব্যাপক ভাবে ঢুকে পড়ছে কৃত্রিম মেধা। এর ভাল দিক যেমন রয়েছে, তেমনই সমস্যার দিক কী রয়েছে, তা-ও ভেবে দেখতে হবে। এমনকি, কৃত্রিম মেধা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইন তৈরি করা প্রয়োজন। রবিবার শহরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক স্তরের এক স্বাস্থ্য সম্মেলনে এমনই কথা উঠে এল দেশ ও বিদেশের চিকিৎসকদের বক্তব্যে।
পিয়ারলেস হাসপাতাল অ্যান্ড বি কে রায় ফাউন্ডেশন, রয়্যাল কলেজ অব ফিজ়িশিয়ান্স, এডিনবরা এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজ়িশিয়ান্স, ইন্ডিয়া-ওয়েস্ট বেঙ্গল চ্যাপ্টারের মিলিত উদ্যোগে দু’দিনের এই ‘মেডিকন ইন্টারন্যাশনাল’ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের গুরুত্ব ও উন্নতির দিকটিও তুলে ধরেন চিকিৎসকেরা। আয়োজকেরা জানাচ্ছেন, সম্মেলনে নার্সদেরও যুক্ত করা হয়েছে। কারণ হিসেবে পিয়ারলেসে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অধিকর্তা চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানান, বিশ্বব্যাপী এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৫৫ শতাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসক ও নার্সের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি দেখা যায়। তাতে চিকিৎসায় ভুলের আশঙ্কা তৈরি হয়।
ওই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চিকিৎসক সুজিত করপুরকায়স্থ বলেন, ‘‘রোগীর স্বার্থে নার্সদেরও উন্নত চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান বাড়াতে হবে। চিকিৎসককে ভয় পাওয়া নয়, প্রয়োজনে প্রশ্ন করতে হবে। চিকিৎসক নির্দেশ দিলেন, আর নার্স শুধু তা পালন করলেন, তেমনটা হওয়া উচিত নয়।’’
স্বাস্থ্য পরিষেবায় ‘টিম ওয়ার্ক’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে সকলকেই সব বিষয়ে অভিজ্ঞ হওয়ার উপরে জোর দিলেন রয়্যাল কলেজের প্রফেসর চিকিৎসক অ্যান্ড্রু এলডার। পাশাপাশি, তিনি বলেন, ‘‘আধুনিক চিকিৎসায় কৃত্রিম মেধার ব্যবহারে চিকিৎসককেও দায়িত্ববান হতে হবে। প্রযুক্তিকে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে হবে।’’
এখন অনেক হাসপাতালেই বিভিন্ন অস্ত্রোপচারে রোবটের ব্যবহার হচ্ছে। প্রযুক্তি নির্ভর সেই চিকিৎসায় যদি ভুল হয় বা সমস্যা দেখা যায়, তা হলে সেটির দায় কার? সেই বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে কৃত্রিম মেধার ব্যবহারে আইনের দিকটিও স্থির করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন চিকিৎসক অশোকানন্দ কোনার। সম্মেলনে অধ্যাপক শ্যামল সেন স্মারক বক্তৃতা দেন ক্যানসার চিকিৎসক মামেন চান্ডি। সমাজে রেসপিরেটরি রিহ্যাবিলিটেশনের (সিওপিডি রোগীদের সুস্থ রাখতে ওষুধ ছাড়াও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা) প্রয়োজন কতটা, সে দিকটিও তুলে ধরেন চিকিৎসকেরা। উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক অজয়কৃষ্ণ সরকার, দেবাশিস দত্ত-সহ অন্যান্যরা।