বেহালা বিমানবন্দর নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা

নিয়ম নতুন নয়। আগেও লাল এলাকা ছিল। সেখানে বাড়ি বানাতে গেলে বিমান মন্ত্রকের অনুমতিও নিতে হত। কিন্তু, আচমকাই সেই লাল এলাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০২:১৪
Share:

বেহালা বিমানবন্দর। ফাইল চিত্র

বেহালা বিমানবন্দরের আশপাশে ‘লাল’ এলাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এই লাল এলাকায় বাড়ি বানাতে গেলে আগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ নিতে হবে।

Advertisement

নিয়ম নতুন নয়। আগেও লাল এলাকা ছিল। সেখানে বাড়ি বানাতে গেলে বিমান মন্ত্রকের অনুমতিও নিতে হত। কিন্তু, আচমকাই সেই লাল এলাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার।

প্রশ্ন উঠেছে, যে বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত বিমান ওঠানামা করে না, তার চার দিকে লাল এলাকা কেন বাড়ানো হল?

Advertisement

কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বুধবার বলেন, ‘‘রাজ্যকে না জানিয়ে ওই এলাকা বাড়ানো হয়েছে। চিঠি দিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে।’’ মঙ্গলবার এ নিয়ে মেয়র বিমানবন্দরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

সাম্প্রতিক অতীতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংঘাত শুরু হয়েছে বিমান মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারের। বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য রাজ্য জমি অধিগ্রহণ করতে রাজি হয়নি। শেষে কর্তৃপক্ষকেই সরাসরি জমি কিনতে হয়েছে। কলকাতার বিকল্প হিসেবে দুর্গাপুর বিমানবন্দরকে ব্যবহার করার রাজ্য সরকারের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ বার নতুন করে বেহালা নিয়ে আবার বিতর্ক দানা বাঁধতে চলেছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

উড়ান প্রকল্পে দেশের ছোট ছোট অব্যবহৃত বিমানবন্দরকে কাজে লাগাতে চায় কেন্দ্র। বেহালা নিয়েও শুরু হয়েছে পরিকল্পনা। আপাতত সেখানে পাঁচিল তোলার কাজ চলছে। ৯৭৫ মিটার লম্বা রানওয়েও বাড়ানো হবে বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। উদ্দেশ্য, ২০-২৫ আসনের যাত্রিবাহী বিমানের জন্য বেহালাকে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু, কবে কেউ জানেন না। এখন সেখানে রাজ্য সরকারের হেলিকপ্টার রয়েছে। এ ছাড়াও এনসিসি ছাত্রদের প্রশিক্ষণের জন্য ছোট ছোট দু’টি দু’আসনের বিমান সেখানে রয়েছে।

বিশ্বের প্রতিটি বিমানবন্দরের আশপাশে বাড়ি বা উঁচু নির্মাণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকে। রানওয়েতে বিমান নামা-ওঠায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্যই এই ব্যবস্থা। ভারতের বিমান মন্ত্রকের কাছে দেশের যে মানচিত্র রয়েছে, তা বিভিন্ন রং দিয়ে ভাগ করা আছে। বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকাগুলি লাল রঙে চিহ্নিত। তাকেই রেড জোন বা লাল এলাকা বলা হয়। অন্য সব এলাকায় বাড়ি বা অন্য নির্মাণ করতে হলে স্থানীয় পুরসভা বা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু, ওই লাল এলাকার জন্য প্রথমে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে। তার পরে নির্মাণের অনুমতি দেবে প্রশাসন বা পুরসভা। এবং এই লাল এলাকায় বহুতল নির্মাণ করা যায় না।

বেহালার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম চালু ছিল। কিন্তু, আচমকাই সেই লাল এলাকার পরিধি বাড়িয়ে দিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠেছে, সেই বর্ধিত এলাকায় ইতিমধ্যেই যে বহুতল বা উঁচু বাড়ি তৈরি হয়ে রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কী হবে?

বিমানবন্দরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বেহালার রানওয়ে বাড়ানোর পরে, যে আকাশ পথ দিয়ে সেখানে বিমান ওঠানামা করবে, তাকে ফানেল বলা হয়। রেড জোনের মধ্যে ফানেল এলাকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা সর্বাধিক। সেখানে যদি বলে দেওয়া উচ্চতার বেশি উঁচু বাড়ি থাকে, তা হলে তা ভাঙতে হবে। নচেৎ রানওয়ে বাড়িয়েও লাভ হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement