কলকাতা বিমানবন্দরে শ্রীকান্ত মোহতা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভুবনেশ্বর। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টানা জেরা। মাঝে মাত্র ৫টা ঘণ্টার বিরতি। সকাল হতেই ফের ঘুম থেকে তুলে জেরাপর্ব শুরু। তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ভুবনেশ্বর। গ্রেফতারের পর থেকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়ার মাঝের সময়টা এ ভাবেই কাটল শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধার, প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার।
রাতে ঠিক কী মানসিক অবস্থায় ছিলেন তিনি, তা অবশ্য সকালে বিমানবন্দরে তাঁর একঝলকেই প্রমাণ মেলে। রোজভ্যালির ২৪ কোটি টাকা প্রতারণায় অভিযুক্ত শ্রীকান্ত মোহতার চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ ছিল স্পষ্ট। টানা জেরায় কার্যত মুষড়ে পড়েছেন তিনি।
সিবিআই সূত্রে খবর, গ্রেফতারের পর রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন পরিবারের লোকেরা। শ্রীকান্ত মোহতার ডায়েট অনুযায়ী সঙ্গে করে খাবারও নিয়ে আসেন তাঁরা। অল্প ভাত, সব্জি, ডাল, দই এবং পরোটা। কিন্তু সিবিআই কর্তারা শ্রীকান্ত মোহতার সঙ্গে দেখা করতে দিলেও সেই খাবার ফিরিয়ে দেন। বাড়ির সুস্বাদু খাবারের পরিবর্তে অন্যান্য অভিযুক্তদের মতো তাঁকেও রাতে খেতে দেওয়া হয় রুটি-তরকারি।
দেখুন ভিডিয়ো:
আরও পড়ুন: উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের বিরুদ্ধে মামলা, কেন্দ্রকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
সিবিআই সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ২টো পর্যন্ত তাঁকে জেরা করা হয়। তারপর ঘুমতে দেওয়া হয়। ফের সকাল ৭টায় ঘুম থেকে তুলে চা আর বিস্কুট খেতে দেন। তারপর ফের শুরু হয় আরও একদফা জেরা।
আরও পড়ুন: জামায় রক্তের দাগ, ৮ বছরের ছাত্রীকে স্কুলে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার প্রধান শিক্ষক
রোজভ্যালির মূল মামলাটি ভুবনেশ্বরে দায়ের হওয়ায় বেলা ১২টা ২০ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে এআই৭৯১ বিমানে তুলে তাঁকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়া হয়। ভুবনেশ্বর পৌঁছন দুপুর ২টো নাগাদ। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ভুবনেশ্বর আদালতে। সিবিআই তাঁকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চাইবে বলে জানা গিয়েছে। আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে ভুবনেশ্বরের সিবিআই দফতরেই তাঁকে জেরা করা হবে। সেখানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষাও করানো হবে।
আরও পড়ুন: শ্রীকান্তের গ্রেফতারিতে টলিউডে কোনও প্রভাব পড়বে কি?
সিবিআই সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত টানা জেরায় আরও বেশ কতগুলো নাম উঠে এসেছে, যাঁরা রোজভ্যালি এবং শ্রীকান্তের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে জড়িত। তবে চিটফান্ডের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তাঁরা যুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেরার সময় শ্রীকান্ত খুব বেশি কথা বলতে চাইছিলেন না। এখনও পর্যন্ত শ্রীকান্তের বয়ানে তাঁরা সন্তুষ্টও হতে পারেননি, সিবিআই কর্তারা জানিয়েছেন।