এলইডির বাড়বাড়ন্তেও উজ্জ্বল রয়েছে মোমবাতি

এলইডি-র ঝলমলে রোশনাইয়েও উজ্জ্বল হয়ে রইল মোমবাতির আলো। চাঁদনি চকের বাজারে এলইডি কেনার ভিড়ের পাশাপাশিই লাইন পড়ল জানবাজারের মোমবাতির দোকানেও। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এলইডি-র চেন, ডিস্কো লাইটের সঙ্গেই পাল্লা দিচ্ছে নানা আকারের রঙিন কিংবা সুগন্ধী মোমবাতি। এলইডি-র মতো সেখানেও এ বার হাজির ‘মেড ইন চায়না’ সংস্করণ। গত কয়েক বছরের মতো এলইডি-র বাজারে এ বারও হাজির কিছু নতুন ধরনের বাতি। গত বছরের ডিস্কো আলোর পরে এ বার বাজার ছেয়ে গিয়েছে এলইডি স্ট্রিপ-এ।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২২
Share:

সমানে সমানে। বাজারে এলইডি আলো এবং রঙিন মোমবাতি।—নিজস্ব চিত্র।

এলইডি-র ঝলমলে রোশনাইয়েও উজ্জ্বল হয়ে রইল মোমবাতির আলো। চাঁদনি চকের বাজারে এলইডি কেনার ভিড়ের পাশাপাশিই লাইন পড়ল জানবাজারের মোমবাতির দোকানেও।

Advertisement

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এলইডি-র চেন, ডিস্কো লাইটের সঙ্গেই পাল্লা দিচ্ছে নানা আকারের রঙিন কিংবা সুগন্ধী মোমবাতি। এলইডি-র মতো সেখানেও এ বার হাজির ‘মেড ইন চায়না’ সংস্করণ।

গত কয়েক বছরের মতো এলইডি-র বাজারে এ বারও হাজির কিছু নতুন ধরনের বাতি। গত বছরের ডিস্কো আলোর পরে এ বার বাজার ছেয়ে গিয়েছে এলইডি স্ট্রিপ-এ। সিনেমার রিলের মতো দেখতে এই আলোর মালার জ্বলা-নেভা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে রিমোটের মাধ্যমে। বদলানো যাবে আলোর রং-ও। জোরালো চেহারায় ফের হাজির ডিস্কো আলোও। তার দাম অবশ্য গত বছরের মতোই।

Advertisement

তবে দীপাবলির বাজারে মোমবাতির কদর যে এখনও অটুট, তা মেনে নিচ্ছেন এলইডি বিক্রেতারাও। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে অবিকল মোমবাতির মতো দেখতে এলইডি আলো রয়েছে তাঁদের ভাঁড়ারে। মিলছে মাটির প্রদীপের ধাঁচে এলইডি-র পঞ্চপ্রদীপও। চাঁদনি মার্কেটের এলইডি বিক্রেতা রাজু রহমান বলেন, “বারান্দায় ‘এলইডি মোমবাতি’ লাগালে দূর থেকে মনে হবে যেন সত্যিকারের মোমবাতিই জ্বলছে।”

মোমবাতি বিক্রেতারা অবশ্য বলছেন, দুধের স্বাদ এ ভাবে ঘোলে মেটে না। উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা এলাকার এক মোমবাতি কারখানার মালিক গৌতম দাশগুপ্ত যেমন বলছেন, “প্রথম বার দীপাবলীতে যখন এলইডি আলো বাজারে এল, তখন আমাদের মোমবাতি বিক্রি খুব কমে গিয়েছিল। ভেবেছিলাম টক্কর দিতে পারব না। কিন্তু গত বছর থেকে দেখছি, ফের মোমবাতি বিক্রি বাড়ছে। এ বছর এখনও পর্যন্ত বিক্রি ভালই হয়েছে।” তাঁর মতে, এলইডি আলোর চেয়ে মোমবাতির খরচ কম। তা ছাড়া, নানা রং ও ডিজাইনের মোমবাতিও এখন কম আকর্ষণীয় নয়। সেই সঙ্গে চিন থেকে আসা ডিজাইনার মোমবাতি সুবাসও ছড়ায়। এক মোমবাতি বিক্রেতা বলেন, “দীপাবলির দিন বাড়িতে অতিথিকে স্বাগত জানান মোমবাতির আলো আর সুগন্ধে। তাঁর কাছে এটা বাড়তি পাওনা হবে। এলইডি আলো তো আর সুগন্ধ ছড়াতে পারে না!”

সারা বছর তেমন চাহিদা থাকে না। মোমবাতি বিক্রেতারা অপেক্ষা করে থাকেন দীপাবলির এই বাজারটার জন্যই। জানবাজারের এক মোমবাতির দোকানে দেখা গেল নানা সাইজের মোমবাতি ঝুুলছে। সবচেয়ে লম্বা একটা মোমবাতি দেখিয়ে বিক্রেতা অরুণ রায় বললেন, “বড় বড় ক্লাবগুলো যারা কালী পুজো করে, তারা এই বড় মোমবাতি কিনে নিয়ে যায়। এ ছাড়া, অনেক ক্রেতাই সাবেক পদ্ধতিতে আলোয় বাড়ি সাজাতে চান। তাঁরা মোমবাতিই জ্বালান। এখন তো মোমবাতিরও নানা ডিজাইন হচ্ছে। ফলে বাজার ফের চাঙ্গা হচ্ছে।”

তবে জ্বলন্ত মোমবাতি কতটা দূষণ ছড়ায়, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। বিশেষজ্ঞদের মতে কালীপুজোয় মোমবাতির দূষণ শব্দদূষণের তুলনায় খুবই কম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, “ভাল মানের মোমবাতি প্যারাফিন দিয়ে তৈরি। তবে তার সঙ্গে অন্য কোনও উপাদন থাকলে সেই মোমবাতি পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড তৈরি করে, যা দূষণ ছড়ায়। তাই বাজার থেকে ভাল মানের মোমবাতিই কেনা উচিত।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement