কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
চলতি শিক্ষাবর্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরে সব আসন ভরছে না। এমনকি,
স্নাতকোত্তর পড়ানো হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ এমন কলেজেও আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে খবর।
আসন ভরাতে এ বার একাধিক কাউন্সেলিং করাতে হয়েছে। বৃহস্পতিবারই শেষ হয়েছে কলা বিভাগের কাউন্সেলিং। এর আগে তিন দফায় বিজ্ঞানের কাউন্সেলিং শেষ হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে সব কলেজে স্নাতকোত্তর বিষয় পড়ানো হয়, তার মধ্যে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ অন্যতম। এই কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানালেন, কলা বিভাগে সেখানে ভর্তি আশানুরূপ হয়েছে। জীববিদ্যা বিভাগেও আসন প্রায় ভর্তি। কিন্তু পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিতে বেশ কিছু আসন খালি পড়ে রয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যা, হয়তো স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষকতার চাকরি পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকেই এই বিষয়গুলি স্নাতকোত্তরে পড়া নিয়ে অনীহা দেখা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে এ দিন বলেন, ‘‘একাধিক কাউন্সেলিংয়ের ফলে
স্নাতকোত্তরের আসন ধীরে ধীরে ভরেছে। এখনও কিছু ফাঁকা আছে। তার মধ্যে বেশ কিছু সংরক্ষিত আসন রয়েছে। আমরা সেগুলি অসংরক্ষিত করার আবেদন জানাব।’’ তিনি আরও জানান, কিছু পড়ুয়া ভর্তি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এর ফলেও আসন ফাঁকা হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সেই আসনগুলি ভরানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে কি না, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় শিক্ষকদের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিশেষ করে বিজ্ঞানের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস শুরু হয়ে গেলে নতুন পড়ুয়াদের অসুবিধায় পড়তে হয়। কলেজগুলিতে কত আসন ফাঁকা থাকছে, সেই বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য।
আবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘আসন ভরাতে যদি দীর্ঘ দিন ধরে ভর্তির প্রক্রিয়া চলে, তা হলে যাঁরা পরে ভর্তি হবেন, তাঁরা কোর্স কী করে শেষ করবেন? সিমেস্টারই তো শেষ হয়ে যাবে।’’
এ দিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট বৈঠক করলে, তা বিধিসম্মত হবে না বলে উচ্চশিক্ষা দফতর চিঠি দেওয়ায় সাম্প্রতিক বৈঠক স্থগিত রাখা হয়েছিল। ওই চিঠি পাওয়ার পরে বার বার অনুমতি চেয়ে পাওয়া যায়নি। শেষে বৈঠক স্থগিত করা হয়। তবে আবার সিন্ডিকেট বৈঠকের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্তর্বর্তী উপাচার্য এ দিন জানান, বৈঠক করা খুবই জরুরি। সেই সময়ে উপাচার্য পদে কেউ না থাকায় ২০২২ সালের উত্তীর্ণরা এখনও শংসাপত্র পাননি। এর সমাধানের জন্য সিন্ডিকেট বৈঠকে আলোচনা করাটা জরুরি বলে তাঁর মত। সেই সঙ্গে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারী স্নাতক স্তরের নতুন পরীক্ষাবিধি নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন। এ সবের জন্য এ দিন সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকার সম্মতি চেয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরে আবার চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য।