কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
সিলিন্ডার ফাঁকা থাকায় অক্সিজেন না পেয়ে রোগী মারা গিয়েছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আগামী সাত দিনের মধ্যে উপাধ্যক্ষের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিকেলে ওই রোগীর পরিজনেরা অভিযোগ করেন, যে সিলিন্ডার অক্সিজেন দেওয়ার জন্য লাগানো হয়েছিল, সেটি আদতে ফাঁকা ছিল। সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে রোগীর।
অভিযোগ পাওয়ার পরেই ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারটি আলাদা করে সরিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ দিন কান-নাক-গলা বিভাগের প্রধান চিকিৎসকের নেতৃত্বে অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার ও নার্সিং সুপারকে ওই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে খবর। জরুরি বিভাগের পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে কী ভাবে ফাঁকা অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকতে পারে, সেই বিষয়টিই গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখতে চাইছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উপাধ্যক্ষ অঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘‘রোগীর পরিজনেরা অভিযোগ করেছেন, সিলিন্ডার ফাঁকা ছিল। কিন্তু আসলে কী ঘটেছিল, তদন্তে সেটাই দেখা হবে।’’
সূত্রের খবর, জরুরি বিভাগে যে সমস্ত সিলিন্ডার রাখা থাকে, সেগুলির একটি নির্দিষ্ট রেজিস্টার রয়েছে। কোন সিলিন্ডার কোথায় ব্যবহৃত হচ্ছে থেকে কোন রোগীকে কতটা গতিতে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে এবং সেটির ব্যবহার শুরুর সময় ও শেষে কতটা খরচ হল, সবই নথিভুক্ত করতে হয়। সেই সমস্ত নথিও খতিয়ে দেখবেন তদন্ত কমিটির সদস্যেরা।
বনগাঁর বাসিন্দা সুদীপ্ত সাহার দাবি ছিল, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই ঘটনাটি ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই সময়ে যাঁরা ওই ওয়ার্ডে কাজ করছিলেন, তাঁদের সকলের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি প্রয়োজনে মৃত তরুণ সাহার পরিজনদের ডেকেও কথা বলা হবে। পরীক্ষা করা হবে সিলিন্ডারটিও। এ দিন উপাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করার সময়ে আরও কতটা সতর্ক হতে হবে, সেই বিষয়েও প্রত্যেককে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’