ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে
প্রবীণ চিকিৎসক তথা আমরি হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মণি ছেত্রীর বিরুদ্ধে ‘গাফিলতিতে মৃত্যু ঘটানো’-র অভিযোগে চার্জ গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ওই নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১১ সালে আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ৯২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা পুলিশ প্রথমে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ‘অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানো’-র অভিযোগ দায়ের করেছিল। গত বছর মণিবাবু-সহ ১৬ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। সেই চার্জশিটকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন প্রবীণ ওই চিকিৎসক।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিচারপতি বাগচী আরও জানিয়েছেন, আলিপুর জেলা দায়রা আদালতেই চার্জ গঠন হবে। বিচার চলাকালীন মণিবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশ নতুন তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারলে নিম্ন আদালতের বিচারক চার্জ পরিমার্জন করতে পারবেন। পাশাপাশি, অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে যে ধারায় চার্জশিট পেশ হয়েছে, তা-ও
বজায় থাকবে।
পিপি জানান, ভারকীয় দণ্ডবিধিতে বলা আছে, ‘অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানো’-র অপরাধের সাজা দশ বছর কারাবাস। আর, ‘গাফিলতিতে মৃত্যু ঘটানো’-র অপরাধের শাস্তি দু’বছর।
মণিবাবুর আইনজীবী সমরাদিত্য পাল ও সোমপ্রিয় চৌধুরী এ দিন আদালতে জানান, বিচারপতি বাগচী তাঁর রায়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন, ওই চিকিৎসক হাসপাতালের
ম্যানেজিং ডিরেক্টর হলেও দৈনন্দিন কাজের তদারকিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। সেই কাজের জন্য ছিলেন হাসপাতালের অন্য অফিসার এবং কর্মীরা।
কিন্তু শাশ্বতবাবু এ দিনের শুনানিতে জানান, হাসপাতালের বেসমেন্ট থেকে দাহ্য পদার্থ না সরালে যে কোনও সময়ে ভয়াবহ আগুন লাগতে পারে— এই মর্মে দমকলের কর্তারা একাধিক বার সতর্ক করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তা সত্ত্বেও সেগুলি সরানো হয়নি। সে জন্য দমকলের লাইসেন্সও পুনর্নবীকরণও হয়নি। ওই হাসপাতালের লাইসেন্স ছিল চিকিৎসক মণিবাবুর নামে।
তাই আগুন লাগার দায় তিনি এড়াতে পারেন না। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে আগুন লাগলে বহু রোগী যে মারা যাবেন, তা-ও ওই চিকিৎসকের অজানা ছিল না।
পিপি আরও জানিয়েছেন, আমরি মামলায় বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বাগচী। সেই নির্দেশ মেনে কী ভাবে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা যায়, তার একটি রূপরেখাও তৈরি করা হবে।