টিমটিমে: দোকানে জ্বলছে একটি মাত্র আলো। সোমবার, বাগড়ি মার্কেটে। নিজস্ব চিত্র
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বিধ্বংসী আগুনে ছাই হয়ে গিয়েছিল বাগড়ি মার্কেট। সেই ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে ছ’মাস। পোড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, কবে মিলবে দমকলের ছাড়পত্র? কবে থেকে পুরোপুরি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন তাঁরা? লোকসভা ভোট শেষ হওয়ার আগে দমকলের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও সন্দিহান ব্যবসায়ীদের একাংশ।
দিন কয়েক আগে দমকলের এক বিশেষজ্ঞ দল বাগড়ি মার্কেটে এসে সেখানকার অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখেছে। ওই দলের এক কর্তা জানাচ্ছেন, তাঁরা এখনও বাজারের অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘অগ্নি-সুরক্ষায় বাজার কর্তৃপক্ষকে যে কাজগুলি আমরা করতে বলেছি, তা সম্পূর্ণ না হলে ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। বাজার কবে পুরোপুরি চালু হবে, এখনই বলা যাচ্ছে না। দোকানদারেরা কত তাড়াতড়ি কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন, তার উপরেই ছাড়পত্র দেওয়া নির্ভর করছে।’’
যদিও বাগড়ির ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই বাজারের ছাদে নতুন করে জলাধার তৈরি করেছেন। প্রতিটি দোকানে বসেছে স্মোক ডিটেক্টর, স্প্রিঙ্কলার, অগ্নি-নির্বাপক। বাজারের প্রতি তলে বসানো হয়েছে ফায়ার অ্যালার্ম। ব্যবসায়ীদের দাবি, সব ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করেই তাঁরা দমকলের বিশেষজ্ঞ দলকে ডেকেছিলেন। কিন্তু ছাড়পত্র না মেলায় তাঁরা হতাশ। এক ব্যবসায়ী রমেশ সায়গল বলেন, ‘‘দমকল প্রতিটি দোকানে শুধু একটা আলো জ্বালিয়ে কাজ চালানোর অনুমতি দিয়েছে। এ ভাবে কি ব্যবসা হয়? ফ্যান নেই, এসি নেই। পর্যাপ্ত আলো নেই। কম্পিউটার চালানো যাচ্ছে না। কেনাবেচার কাজ শুরুই করতে পারছি না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সম্প্রতি বাগড়ি মার্কেট ঘুরে দেখা গেল, বেশ কিছু দোকান নতুন করে তৈরি হয়েছে। এমনই এক দোকানদার বললেন, ‘‘আমরা তৈরি। স্মোক ডিটেক্টর, স্প্রিঙ্কলার— সবই লাগানো হয়ে গিয়েছে। দমকলের অনুমতি পেলেই ব্যবসা শুরু করে দিতে
পারব। কিন্তু সেই অনুমতি কবে পাব, ঈশ্বরই জানেন।’’ বাগড়ির ব্যবসায়ীরা আরও দাবি করেছেন, ২৩৩টি পাইকারি ওষুধের দোকানের বেশিরভাগেরই খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এক ওষুধ ব্যবসায়ী অজিত সাহা বলেন, ‘‘সব সাজিয়ে বসে রয়েছি। আগুন মোকাবিলায় সব ব্যবস্থা নিয়েছি। তবু দোকান চালু করতে পারছি না। আর কত দিন বেকার থাকব?’’
বাগড়ি মার্কেটের একতলায় কয়েকটি দোকান অবশ্য একটা আলো জ্বালিয়েই ব্যবসা অংশত শুরু করে দিয়েছে। বাইরের কিছু দোকান কেনাবেচা শুরু করেছে জেনারেটর চালিয়ে। কয়েকটি দোকানের বিক্রেতারা জানালেন, সারা দিন জেনারেটর চালানোর
খরচ প্রচুর। তবু বাড়িতে না থেকে যদি কিছু বিক্রিবাটা হয়, সেই আশাতেই দোকান খুলে রেখেছেন তাঁরা। ‘বাগড়ি মার্কেট সেন্ট্রাল কলকাতা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রেসিডেন্ট আশুতোষ সিংহ অবশ্য শীঘ্র দমকলের ছাড়পত্র পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘‘আরও কিছু ফায়ার অ্যালার্ম, স্প্রিঙ্কলার, স্মোক ডিটেক্টর লাগানোর কথা বলেছে দমকল। সেগুলি লাগিয়ে ফের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করব। আশা করছি, দ্রুত তা মঞ্জুর হবে।’’