দু’কোটি টাকা তোলা চেয়ে কলকাতার এক ব্যবসায়ীকে পড়শি রাজ্যের এক দুষ্কৃতী দল হুমকি-ফোন করেছে বলে অভিযোগ পেল লালবাজার। পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়েছে— টাকা না পেলে ব্যবসায়ীকে খুন করা হবে। বেশ কয়েক বার তিনি ওই ফোন পেয়েছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীর। তাঁর নিরাপত্তায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রে খবর, ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি শেক্সপিয়র সরণি এলাকায়। ১৪ জানুয়ারি দায়ের হওয়া ওই অভিযোগের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখার হাতে। প্রাথমিক ভাবে ওই দুষ্কৃতীদের পান্ডাকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
এক সময়ে কলকাতা ও আশপাশের ব্যবসায়ী-প্রোমোটারদের কাছে তোলা চেয়ে দুষ্কৃতীদের হুমকির ঘন ঘন অভিযোগ পেত পুলিশ। দেড়-দু’যুগ আগে ওই সব ঘটনায় কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী-প্রোমোটারদের একাংশ খুন হয়েছেন, ধরাও পড়েছে বহু তোলাবাজ।
সম্প্রতি এমন অভিযোগ আসছিল না পুলিশের কাছে। পুলিশের একাংশের দাবি, গব্বর, গুড্ডা, নাদিম, চিকনা, যিশু, টিশুর মতো তোলাবাজেরা এখন জেলে। আর এক অংশের মতে, এখন আর তোলা চেয়ে হুমকি দিতে হয় না। পুলিশের দাবি, রাজনৈতিক নেতার আশ্রয়ে থাকা তোলাবাজদের সঙ্গে বিরোধিতায় না গিয়ে অধিকাংশ ব্যবসায়ী-প্রোমোটার তাদের সঙ্গে সমঝোতায় যান।
সম্প্রতি আলিপুর ও আশপাশে তোলাবাজির কিছু অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। তাদের বক্তব্য, শেক্সপিয়র সরণির ব্যবসায়ীর অভিযোগের মতো সেগুলি তত গুরুতর নয়। পুলিশ জানায়, এই ব্যবসায়ী পশ্চিমবঙ্গ ও পড়শি রাজ্যে ব্যবসা করেন। পড়শি রাজ্যের একটি কুখ্যাত দুষ্কৃতী দলই তোলা চেয়ে তাঁকে হুমকি ফোন করেছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ জানায়, ৩১ ডিসেম্বর থেকে হুমকি ফোন আসছে ওই ব্যবসায়ীর কাছে।
তা হলে দু’সপ্তাহ পরে অভিযোগ দায়ের হল কেন? পুলিশের একটি সূত্রে খবর, প্রথমটায় ওই ব্যবসায়ী ভেবেছিলেন, কেউ ফাঁকা হুমকি দিচ্ছে। পরে বোঝা যায়— যারা ফোন করছে, তারা তাঁর গতিবিধি ও পড়শি রাজ্যে ব্যবসা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পাঁচটি নম্বর থেকে হুমকি ফোন এসেছে। তবে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কিছু ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল ব্যবহার করেছে। আবার যে সব মোবাইল নম্বর থেকে ফোন এসেছে, সেগুলি এখন বন্ধ।