এগিয়ে যাওয়া দূর অস্ৎ, ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে বিএসএনএল-এর মোবাইল পরিষেবা। ফোন করা থেকে ফোন ধরা, মোবাইলে ইন্টারনেট প্রায় সব পরিষেবাই ঠিক মতো মিলছে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। ফলে নিত্যই কমছে গ্রাহক-সংখ্যা।
ঘুণ ধরা পরিস্থিতির কথা অনেকটাই মেনে নিয়েছেন বিএসএনএল কর্তারা। তবে লাল ফিতের ফাঁস খুলে ওই পরিস্থিতি কাটাতে কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। কলকাতা টেলিফোন্স এলাকায় বড় ‘জোন’ তৈরি করে পাল্টানো হচ্ছে প্রযুক্তি। নতুন প্রযুক্তি চালু হতে পারে ডিসেম্বরে। তার পরেই কলকাতা টেলিফোন্স এলাকায় পরিষেবা অনেক উন্নত হবে বলে দাবি সংস্থার। পরের ধাপে অন্য জোনে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিন দফায় কলকাতা টেলিফোন্স এলাকায় বিএসএনএলের পরিষেবা উন্নত করা হবে।
বিএসএনএল সূত্রে খবর, এত দিন কলকাতা টেলিফোন্স এলাকায় মোবাইল পরিষেবার জন্য দু’টি প্রযুক্তি ছিল। একটি এরিকসন, অন্যটি নরটেল। দু’টিই বিদেশি প্রযুক্তি। এ বার আসছে চিনের জেডটিই প্রযুক্তি। আপাতত নিউ টাউন-রাজারহাট হয়ে উত্তর-দক্ষিণ-মধ্য কলকাতা ও হাওড়া পর্যন্ত এলাকায় লাগানো হচ্ছে ওই প্রযুক্তি। এটি লাগালে সব গ্রাহক ৩জি নেটওয়ার্ক অর্থাৎ ইউনিভার্সাল মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের আওতায় চলে আসবেন। এখন গ্রাহকদের কেউ কেউ পান ৩জি। অনেকে পান ২জি অর্থাৎ গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক। অথচ বাজারে চালু হয়ে গিয়েছে ৪জি নেটওয়ার্ক।
বিএসএনএলের জেনারেল ম্যানেজার (মোবাইল) বিশ্বজিৎ পাল বলেন, “১৪৬টি টাওয়ার চিহ্নিত করে সেগুলিতে লাগানো হচ্ছে নয়া প্রযুক্তি।” এই প্রযুক্তিতে টাওয়ারগুলিতে ৪২ এমবিপিএস তরঙ্গ বাতাসে ভাসানো হবে। গ্রাহকেরা মোবাইলে পাবেন ২১ থেকে ২২ এমবিপিএস। বিএসএনএলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার দেবজিৎ সাহা বলেন, “তরঙ্গের ক্ষমতা বেশি হলে ভাল ভাবে কথা বলা যাবে। মোবাইলে ভাল নেট পরিষেবাও মিলবে।”
বিএসএনএল সূত্রের খবর, এখন গ্রাহকেরা মোবাইলে পান (৩জি-র ক্ষেত্রেও) কোথাও ৩.৬ এমবিপিএস, কোথাও ১৪.৪ এমবিপিএস। নতুন প্রযুক্তি বসানোর কাজ শেষ হলে ১৪৬টি টাওয়ারের মধ্যে যেগুলি ভাল রয়েছে, সেগুলিকে কলকাতা টেলিফোন্সের নয়া জোনের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যাতে ওই এলাকায় টাওয়ারগুলির ক্ষমতা আরও বাড়ানো যায়।
নয়া বৃত্তে উন্নতি ঘটলে তার বাইরের গ্রাহকেরাও যাতে সুফল পান, সে দিকেও নজর দিচ্ছে বিএসএনএল। কলকাতার আর এক জেনারেল ম্যানেজার অসীমকুমার সিংহ বলেন, “দিল্লিতে মন্ত্রকের কাছে পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে গোটা কলকাতা টেলিফোন্স এলাকায় মোবাইল পরিষেবা অনেক উন্নত হবে।”
গ্রাহকদের আরও অভিযোগ, লোডশেডিং হলে বহু এলাকায় মোবাইল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিএসএনএল সূত্রের খবর, টাওয়ারগুলির বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে এই বিপত্তি। কর্তৃপক্ষ জানান, টাওয়ারে বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে বসানো হচ্ছে নতুন ব্যাটারি। দু-তিন মাসেই অসুবিধা দূর হয়ে যাবে।