ফাইল ছবি
কয়েক বছর আগে বাবা মারা গিয়েছেন। দ্বিতীয় বার বিয়ে করলেও সঙ্গে থাকতেন না স্ত্রী। বাবার মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবেশীদের সঙ্গেও মেলামেশা ছিল না। দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন প্রৌঢ়। বুধবার রাতে সেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হল তাঁর পচাগলা দেহ। ঘটনাটি পর্ণশ্রী থানার পাড়ুই কাঁচা রোড এলাকার।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুজয় চক্রবর্তী (৫৭)। দিন দুয়েক ধরে তাঁর বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোনোয় বুধবার থানায় খবর দেন স্থানীয়েরা। রাত ১০টা নাগাদ পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে, সোফার উপরে নিথর অবস্থায় পড়ে আছেন সুজয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ছ’বছর আগে সুজয়ের মা মারা যান। বাবার মৃত্যু হয় কয়েক বছর আগে। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ছেড়ে যাওয়ার পরে ফের বিয়ে করেন সুজয়। কিন্তু দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-ও সঙ্গে থাকতেন না। এলাকার এক বাসিন্দা বাপি বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুনেছিলাম, সুজয় নামী সংস্থায় কাজ করতেন। তবে ইদানীং কাজে যেতে দেখিনি। বাবার মৃত্যুর পর থেকে উনি কেমন যেন হয়ে গিয়েছিলেন। পাড়ার রাস্তা দিয়ে কেউ গেলে গালিগালাজ করতেন।’’ এলাকাবাসীর দাবি, শুধু খাওয়ার জন্য বাইরে বেরোতে দেখা যেত সুজয়কে।
বাসিন্দাদের দাবি, চার বছর আগে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে কয়েক জনের মৃত্যুর পরে অবসাদে ভুগতে শুরু করেন ওই প্রৌঢ়। যদিও কিছু দিন পরে তিনি স্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। তবে বাবার মৃত্যুর পরে সুজয় নিজেকে কার্যত গুটিয়ে নেন বলে দাবি। মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘নিজের সমস্যা, চাওয়া-পাওয়া কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে না-পারা অবসাদের প্রবণতা বাড়ায়। প্রিয়জন চলে গেলে একাকিত্ব আরও বাড়ে। এই সময়ে পরিচিতেরা সেই ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা করলে এমন সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে।’’