প্রতীকী চিত্র।
কেউ মাসের পর মাস ঘুরছেন জন্মের শংসাপত্র নিতে। কেউ আবার পুরসভার কল থেকে ঘোলা জল বেরোনোর অভিযোগ করে আসছেন এক বছর ধরে। কারও অভিযোগ, মাসের পর মাস পাড়ার নর্দমা পরিষ্কার হচ্ছে না। এঁদের সকলেরই বক্তব্য, পুরসভাকে বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না।
হাওড়া পুরসভায় বারংবার দরবার করা সত্ত্বেও যাঁদের সমস্যা মেটেনি, তাঁদের জন্য সোমবার পুরসভার গেটের সামনে ‘মে আই হেল্প ইউ’ নামে এক অভিনব কমর্সূচি শুরু করেছে বিজেপির যুব মোর্চা। উদ্যোগটি পুরোদস্তুর রাজনৈতিক হলেও এ দিন ওই কর্মসূচির জেরেই বেআব্রু হয়ে গিয়েছে হাওড়া পুরসভার পরিষেবার বেহাল দশা। বিজেপির দাবি, এক দিনেই তাদের একটি নির্দিষ্ট ফর্মে ৫০টি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। আরও দু’দিন এই কর্মসূচি চলবে। পুর পরিষেবা চাইতে এসে সাধারণ মানুষের হেনস্থার ছবিটা আরও পরিষ্কার হবে।
এ দিন সকাল ১০টার পরে পুরসভার গেট খুলতেই বিজেপির জেলা নেতৃত্ব ও যুব মোর্চার সদস্যেরা রীতিমতো টেবিল সাজিয়ে হেল্প ডেস্ক খুলে বসে পড়েন উল্টো দিকে। বেলা একটু গড়াতেই পুরসভায় এসে সাহায্য না পেয়ে হেল্প ডেস্কে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে যান ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, বৃদ্ধ আনোয়ার আলি। তাঁর অভিযোগ, গত এক বছর ধরে কল থেকে ঘোলা জল বেরোচ্ছে। পুরসভাকে বারবার জানিয়েও ফল হয়নি। একই ভাবে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের নারায়ণ বসাকের অভিযোগ, মাসের পর মাস ঘুরছেন একটা জন্মের শংসাপত্রের জন্য। কিন্তু পাননি। ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের জলধর মণ্ডলের অভিযোগ, সেপটিক ট্যাঙ্ক উপচে পড়ছে। সাফাইয়ের জন্য সদর দফতর থেকে বরো অফিস, সর্বত্রই ঘুরেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি।
বিজেপির দাবি, বেলা যত গড়িয়েছে, হেল্প ডেস্কে আসা অভিযোগের সংখ্যাও বেড়েছে। দলের জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘আগামী তিন দিন এই হেল্প ডেস্ক থাকবে। চার দিনের মাথায় আমরা
সমস্ত অভিযোগ নিয়ে পুর কমিশনারের কাছে যাব।’’ যুব মোর্চার সভাপতি ওমপ্রকাশ সিংহ হুমকি দিয়ে বলেন, ‘‘তিন দিনের মধ্যে এই সমস্ত অভিযোগের মীমাংসা করতে হবে। সেই সঙ্গে কবে ভোট হবে, ঘোষণা করতে হবে। না হলে পুরসভার গেটে তালা দিয়ে দেব।’’
পুরসভার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “পাবলিক গ্রিভান্স সেলে প্রতিদিন একাধিক
অভিযোগ জমা হয়। কেউ যদি কোনও সমস্যা নিয়ে আসেন, তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং সমাধানের চেষ্টা করা হবে। আর কেউ যদি সরকারি কাজে বাধা দেন, তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’